চলতি গ্রীষ্মে বাংলাদেশ থেকে দুবাই ভ্রমণকারী যাত্রীদের ফ্রি হোটেল রুম অফার করছে এমিরেটস। তবে, দুবাই রিটার্ণ ট্রিপের ক্ষেত্রে এই অফার প্রযোজ্য। ২০মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের সময়কালে ভ্রমণের জন্য আগ্রহীদের ১৭-৩০মে, ২০২২ এর মধ্যে টিকিট ক্রয় করতে হবে।
ইকোনমি শ্রেণীর যাত্রীরা দুবাইয়ের হিলটন গার্ডেন ইন হোটেলে এক রাত্রীর জন্য এবং বিজনেস ও প্রথম শ্রেণীর যাত্রীরা জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট মার্কুইজ হোটেলে দুই রাত্রীর জন্য বিনামূল্যে আবাসন সুবিধা পাবেন।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ এর মধ্যে ভ্রমণকালে যাত্রীরা দুবাই ও সংযুক্ত আরব আমীরাতে অতিরিক্ত কিছু সুবিধা ভোগ করবেন। যাত্রীরা তাদের এমিরেটস বোর্ডিং পাস দেখিয়েই দুবাইয়ের শত শত রিটেইল স্টোর, অবকাশ এবং ডাইনিং আউটলেটে অভূতপূর্ব ডিসকাউন্ট পাবেন। মে মাসে দুবাই ভ্রমণকারী যাত্রীরা বিনামূল্যে দুবাইনা ম্যারিনা ক্রুজও উপভোগ করতে পারবেন।
এমিরেটস এবং ফ্লাই দুবাইয়ের লয়ালটি প্রোগ্রাম-এমিরেটস স্কাইওয়ার্ডসের প্লাটিনাম, গোল্ড ও সিলভার সদস্যরা দুবাইয়ের বিখ্যাত দুবাই মল-এ ১০০দিরহাম বা তারও অধিক মূল্যের পন্য, খাবার বা বিনোদন সুবিধা ক্রয় করলে প্রতি ১মার্কিন ডলার (৩.৬৭দিরহাম) এর বিপরীতে ১মাইল (পয়েন্ট) অর্জন করবেন। তবে, ব্লু সদস্যরা ২মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১মাইল পাবেন।
এমিরেটস স্কাইওয়ার্ডস সদস্যরা ফ্লাইট টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে ক্যাশ+ মাইল সুবিধা নিতে পারবেন। এর ফলে টিকিট ক্রয়ে তাদের ক্যাশ খরচ অনেকটা কমে আসবে।
emirates.com/bd emirates.com/bd ভিজিট করে বিস্তারিত তথ্য লাভ করা ছাড়াও টিকিট বুক করা যাবে। এমিরেটসের প্রিমিয়াম যাত্রীরা বরাবরের মতোই দুবাইয়ে ট্রান্সফার এবং লাউঞ্জ সুবিধা নিতে পারবেন।
এমিরেটস বর্তমানে ঢাকা থেকে সুপরিসর উড়োজাহাজের সাহায্যে দৈনিক ৩টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে এবং বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণকারী যাত্রীরা ভায়া দুবাই বিশ্বের ১৪০টির অধিক গন্তব্যে সুবিধাজনক সংযোগ পাচ্ছেন।
প্রখর রোদ আবার ঝুম বৃষ্টি। গত কয়দিন ধরে এমনই আবহাওয়া বিরাজ করছে। কালবৈশাখীর এই সময়ে মাঝেমধ্যেই ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। এতে ক্ষতি হতে পারে আপনার শখের গাছের। ঝড় আর বৃষ্টির মধ্যে গাছকে সুরক্ষিত রাখতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন—
শিকড় সুরক্ষিত রাখুন
গাছকে বাঁচিয়ে রাখে শিকড়, অত্যাধিক বৃষ্টিপাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে যায়। এতে শিকড় পচে যেতে পারে। গাছের মাটির ওপর বেশ কিছু পরিমাণ প্রাকৃতিক সার দিয়ে রাখুন। এতে মাটি সরাসরি অত ভেজে না। শিকড় সুরক্ষিত থাকে।
ক্যাকটাস রাখুন ঘরে
ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট, পাথরকুচি ইত্যাদি গাছে খুব অল্প পরিমাণ পানি লাগে। এসব গাছ বৃষ্টির দিনে ঘরে ঢুকিয়ে রাখুন। বারান্দায় রাখলে ভেতরের দিকে রাখুন। অতিরিক্ত পানি জমলে এই গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
গাছ আড়ালে রাখুন
সদ্য গাছ লাগালে চারা গাছকে ছাদ বা বারান্দার কিনারায় রাখবেন না। ছায়ার মধ্যে রাখতে চেষ্টা করুন। নাহয় ভারী বৃষ্টি বা ঝড়ে গাছের ক্ষতি হতে পারে। স্পর্শকাতর গাছ হলে ঘরের মধ্যে রাখুন কিংবা প্লাস্টিক মুড়িয়ে রাখুন। এতে গাছের গায়ে সরাসরি বৃষ্টি লাগবে না।
ছাদের গাছের যত্ন
বৃষ্টির সময় ছাদে রাখা গাছগুলোর বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত। গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমলে টব কাত করে রাখুন। গাছের মাটি খুঁড়ে দিন।
যদিও বৃষ্টির পানি গাছের জন্য ভালো। তবে, অতিরিক্ত পানি গাছের ক্ষতি করে। সেদিকে খেয়াল রাখুন। গাছের যত্ন নিন।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, সুন্দরবনে ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে ২০১৫ সালে সর্ব প্রথম বাঘ গণনা করা হয়। ২০১৫ সালে সুন্দরবনের ১০৬টি বাঘ পাওয়া যায়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়ে হয় ১১৪টি। আর হরিণ বেড়ে রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজারটি, এছাড়া ২০০টি কুমির এবং ৪০ হাজার ৫০ হাজারটি বানর রয়েছে।
সোমবার জাতীয় সংসদে দিদারুল আলম (চট্টগ্রাম-৪) এর লিখিত প্রশ্নের জবাবে শাহাব উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, সুন্দরবনের হরিণ ও কুমির নিধন বন্ধে সরকার ২০১২ সনে বন অধিদপ্তর, কোস্ট গার্ড ও র্যাব এর ফার্স গঠন করে সুন্দরবন হতে দুষ্কৃতিকারী, জলদস্যু বিতাড়িত করা হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৩-২০২৭) প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী অপরাধ বন্ধে স্মার্ট টহলের বিষয়ে বন কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে স্মার্ট টহল ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়। বিশেষ টহল ব্যবস্থায় দ্রুতগামী জলযান ও ফোন ব্যবহার করা হয়।
সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী প্রজনন মৌসুম জুন-জুলাই-আগস্ট- এই তিন মাসে সুন্দরবনে সব ধরনের পাশ পারমিট বন্ধ রাখা হয়। সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালীদের বাঘ, হরিণ ও কুমির নিধন বন্ধে নিয়মিত সচেতনতামূলক সভা ও উঠান বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী পাচাররোধে দুবলার চরে রাস মেলা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে। সুন্দরবনের রক্ষিত বন ব্যবস্থাপনার নির্মিত চারটি রেঞ্জে চারটি সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি, প্রতিটি গ্রামে পিপলস্ ফোরাম, ডিজে কনজারভেশন ফোরাম, কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ কার্যকর রয়েছে।
সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের জন্য ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। সুন্দরবনে বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে নিহত বা আহত ব্যক্তির পরিবারকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূর দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দেশে বায়ুদূষণে বছরে দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা এ তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান, জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিবছর ৭ লাখ অপরিণত নবজাতকের মৃত্যু হয় ও প্রতি মিনিটে মারা যান ১৩ জন।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বর্ধন জং রানা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৩০ সাল থেকে ২০৫০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে অপুষ্টি, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া ও হিট স্ট্রেসে বিশ্বে বছরে অতিরিক্ত আড়াই লাখ মানুষ মারা যাবে।
তিনি আরও বলেন, তামাকের ব্যবহারে বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৯৬১ মানুষ মারা যান। পরোক্ষ ধূমপানে ২৪ হাজার ৭৫৭ জন মারা যান। এখানে প্রক্রিয়াজাত খাবার ও কোমল পানীয়ের ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। দ্রুত বর্ধমান এ সংকট প্রতিরোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ সংকট করোনার চেয়েও বড় ও স্থায়ী বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য ও বিশ্বকে রক্ষায় জলবায়ু কর্মপন্থা গ্রহণ করে সরকার, নাগরিক সমাজ, শিল্পকারখানা এবং অংশীজনদের একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, পৃথিবীর স্বাস্থ্য ভালো রাখা আমাদের দায়িত্ব। ঢাকা শহরে দেড় কোটি লোক বসবাস করে। তাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যহানিকর পরিবেশে থাকতে হয়। গাড়ির আওয়াজ হচ্ছে। ভবন নির্মাণে শব্দ হচ্ছে। ঢাকার আশপাশে শত শত ব্রিকফিল্ড। ধূলিকণাগুলো বাতাসে উড়ছে। খাদ্যে অনেক সময় ভেজাল করা হয়।
মেদ ঝরানোর জন্য রোজ সকালে খালি পেটে লেবু পানি চুমুক দিচ্ছেন? বাড়তি ফলের আশায় অনেকেই আবার দিনে একাধিক বার লেবু পানি খেয়ে থাকেন। কিন্তু জানেন কি, লেবু পানি শুধু উপকার নয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই পানীয় শরীরের ক্ষতিও করে। এই পানীয়টি পান করার আগে জেনে নিন কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দাঁতের ক্ষতি হয়
লেবুর মধ্যে ভরপুর মাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড শরীরের পক্ষে ভাল। বেশি পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড খেতে শুরু করলে দাঁতের এনামেল বা আস্তরণে ক্ষয় দেখা দেয়। ফলে বেশি পরিমাণে লেবু পানি খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। তাছাড়াও অধিক মাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড খেলে মুখে ঘা-ও হতে পারে।
ফাইল ছবি
গ্যাস ও পেটে ব্যথার সমস্যা
লেবু এমনিতে পেটের জন্য বেশ উপকারী। লেবুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে। তবে অধিক মাত্রায় লেবু পানি খেলে পেটের গন্ডগোলও হতে পারে। যাদের অম্বলের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও এই পানীয় নিয়মিত না খাওয়াই শ্রেয়।
মাইগ্রেন ব্যথা বাড়ে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সাইট্রিক অ্যাসিড যুক্ত খাবার অত্যধিক মাত্রায় খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে। তাই যাদের এই সমস্যা রয়েছে, তারা অবশ্যই সতর্ক থাকুন।
ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা
অতিরিক্ত মাত্রায় লেবু পানি পান করার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। লেবুর রসে থাকা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড থাকে যা মূত্রবর্ধক। পিত্তাশয়ে ঘন ঘন মূত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করে এই অ্যাসিড। সুত্র আনন্দবাজার পত্রিকার।
সূর্যের আলো মানুষের শরীরের বহু উপকার করে। বিশেষ করে দিনের শুরুর দিকে, যখন আলো ততটা তেতে ওঠেনি। সূর্যের আলো মানুষের শরীরের কিছু ক্ষতিও করে।
ভিটামিন ডি তৈরিতে সাহায্য করে :
সূর্যের আলো নিয়ে কথা বলতে গেলে শুরুতেই চলে আসে ভিটামিন ডি’র কথা, বলছিলেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিষয়ে সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. কানিজ মাওলা। তার ভাষায় ভিটামিন ডি হচ্ছে ‘ম্যাজিক মেডিসিন’।
“বেশিরভাগ ভিটামিন শরীরে পেতে হলে আপনাকে পয়সা খরচ করতে হবে। অর্থাৎ নানা রকম খাবার কিনে খেতে হবে, তারপর শরীরে ভিটামিনের যোগান পাবেন। কিন্তু ভিটামিন ডি পাবেন একদম বিনামূল্যে যদি আপনি নিয়মিত সূর্যের আলোতে যান। খাবার দিয়ে শরীরের ভিটামিন ডি’র চাহিদা পূরণ হয় খুব কমই। এই জাদুর বটিকা মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং সূর্যের আলো ছাড়া মানুষের শরীর ভিটামিন ডি প্রস্তুত করতে পারে না”, বলছিলেন ডা. কানিজ মাওলা।
তিনি ব্যাখ্যা করছিলেন এটি একটি চক্রের মতো। মানুষের ত্বকের নিচে এক ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। সূর্যের আলোতে গেলে তা ভিটামিন ডি তৈরি করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম তৈরি করে তা ব্যবহারে শরীরকে সহায়তা করে। হাড়, দাঁত, নখের সুরক্ষায় দরকার ক্যালসিয়াম। এই প্রক্রিয়ার শুরু সূর্যের আলোর সাথে ত্বকের সংস্পর্শের মাধ্যমে।
ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরকে সহায়তা করে। এটি পর্যাপ্ত না পেলে শিশুদের পায়ের হাড় বেঁকে যাওয়া রোগ রিকেট হতে পারে। বয়স্কদের হাড় দুর্বল করে দেয় এমন রোগ অস্টিওম্যালাসিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। একই ভিটামিন শরীরের ফসফেট নিয়ন্ত্রণ করে। সুস্থ পেশির জন্যেও এটি দরকার।
তিনি বলছেন, “আজকাল শহরের মানুষজন চাকরি করে সারাদিন অফিসে থাকে, বাচ্চারা স্কুল কোচিং-এ থাকে। তাদের মাঠে খেলার সুযোগ আগের মতো নেই। তাই গায়ে সূর্যের আলো কম লাগে। আমি জোর গলায় বলতে পারি মানুষের শরীরে এখন ভিটামিন ডি কম। যে ভিটামিন ডি এত কাজে আসে সেটি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত সূর্যের আলোতে যেতেই হবে।”
মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি :
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমদ বলছেন, সূর্যের আলোর সাথে হিসেব করে ঘড়ির কাটা চলে। আর আমাদের শরীরের যে ঘড়ি আছে সেটির কাটা নিয়ন্ত্রণ করে সূর্যের আলো। এই আলো আমাদের ঘুম পাড়ায় এবং জাগিয়ে তোলে।
সূর্যের আলো এবং অন্ধকার মানুষের শরীরে কিছু হরমোন তৈরি করতে ও তা নিঃসরণে সহায়তা করে। মানুষের ত্বকে সূর্যের আলো পড়লে মেলানিন নামে একটি রাসায়নিক তৈরি হয়। মানুষের ঘুমের জন্য প্রয়োজন যে হরমোন সেটি হচ্ছে মেলাটোনিন। সেটি তৈরিতে এই মেলানিন প্রয়োজন।
অন্যদিকে যখন সূর্যের আলো চলে যায় তখন মানুষের শরীর মেলাটোনিন হরমোনটি নিঃসৃত হয়। তখন আমাদের ঘুম পায়। এভাবেই মানুষের ঘুমের চক্র সূর্যের আলোর উপর নির্ভরশীল, ব্যাখ্যা করছিলেন অধ্যাপক আহমদ।
“যারা রাতে জেগে থাকে এবং দিনে ঘুমায় তারা তাদের শরীরের এই ঘড়ির কাটার প্রাকৃতিক নিয়ম ভাঙে। শরীর বলছে ঘুমাও কিন্তু আমি জেগে আছি। এতে তাদের আচরণে পরিবর্তন আসো। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, বেশি রাগ করে। এদের অনেকে সহজে মাদক গ্রহণে আসক্ত হয়। নিজেকে আঘাত করার প্রবণতা থাকে। এটাকে বলে সার্কাডিয়ান রিদম স্লিপ ডিজঅর্ডার। ভাল মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সূর্যের আলোর নিয়ম মেনে শরীরের ঘড়িকে চলতে দিতে হবে।”
সূর্যের আলো মন মেজাজ কিভাবে ভালো রাখে সেটি ব্যাখ্যা করে তিনি বলছেন, সূর্যের আলোতে গেলে মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামে একটি হরমোন নিঃসরণ হয়। এটি মানুষের মন, মেজাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। যারা নিয়মিত দিনের আলোতে বের হন না, রাতে কাজ করেন তাদের বিষণ্ণতায় বেশি ভুগতে দেখা যায়। যেসব শীতের দেশে সূর্যের আলো কম সময় ধরে থাকে সেসব দেশে মানুষজন বিষাদে ভোগেন বেশি।
বিষাদ কমাতে ‘লাইট থেরাপি’ ব্যাবহার করা হয়। সূর্যের আলোকে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অথবা সরাসরি সূর্যের আলোতে যেতে বলা হয়। এতে বিষণ্ণতা অনেকাংশে কমে যায়।
হেলাল উদ্দিন আহমদ বলছেন, “বৈজ্ঞানিক কথার বাইরেও কথা হচ্ছে দেখবেন আমাদের রৌদ্রোজ্জল দিনে সূর্যের আলো দেখলে ভালো। আবার মেঘাচ্ছন্ন, বৃষ্টির দিনে আমাদের মন খারাপ থাকে। এগুলোও কিন্তু সাধারণ বিশ্বাস।”
কখন এবং কতক্ষণ :
অধ্যাপক ডা. কানিজ মাওলা বলছেন, সূর্যের আলো সবচেয়ে ভালো কাজ করে দিনের শুরুতে। যখন আপনার ছায়া আপনার চেয়ে ছোট। গরমকালে প্রতিদিন দশ থেকে পনের মিনিট যথেষ্ট।
তবে কি কাপড় পরে আছেন তার উপরও নির্ভর করবে কতক্ষণ। বেশি ঢেকে থাকা কাপড় পড়লে বেশিক্ষণ থাকতে হবে। তাই শীতকালে তিরিশ মিনিট পর্যন্ত।
যে ক্ষতি করে :
সূর্যের আলোর ক্ষতি খুব বেশি নেই। সূর্যের আলোতে অনেক বেশি সময় ধরে থাকলে ত্বকের রঙ পরিবর্তন হয়, ত্বক পুড়ে যায়। এর একটিই বড় ধরনের ক্ষতি ।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা এনএইচএস বলছে, সূর্যের আলোতে থাকে ‘আল্ট্রাভায়োলেট লাইট’ বা অতিবেগুনি রশ্মি। সূর্যের আলোতে হঠাৎ করে খুব বেশিক্ষণ থাকলে এই রশ্মি ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
যেমন বেড়াতে গিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকে দীর্ঘ সময় সৈকতে কাটান। এর অর্থ হচ্ছে হঠাৎ করে অনেক বেশি সূর্যের আলো। ত্বকের ক্যান্সার কিছুটা ত্বকের রঙের উপরেও নির্ভর করে। ত্বকের রঙ গাঢ় হলে সূর্যের আলোতে ক্যান্সারের প্রবণতা কম হতে দেখা গেছে।
স্টোররুমে পাওয়া গেলো ৪০০ বছর পুরোনো ডাচ চিত্রকর্ম! বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, এই চিত্রকর্মের দাম হতে পারে কয়েক মিলিয়ন ডলার। বহু বছর ধরে এই চিত্রকর্মটি পড়ে ছিল অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের উডফোর্ড একাডেমির স্টোররুমে। তবে সম্প্রতি এক রিস্টোরেশন বা পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলার সময় মূল্যবান এই চিত্রকর্মের সন্ধান পাওয়া যায়। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
খবরে জানানো হয়, ‘স্টিল লাইফ’ নামের ওই চিত্রকর্মটি ১৭ শতকে আঁকা হয়েছিল। এই যুগটিকে বলা হয় ডাচ স্বর্ণযুগ। উডফোর্ড একাডেমির যে ভবনে এই চিত্রকর্মটি পড়ে ছিল তা ন্যাশনাল ট্রাস্ট অব অস্ট্রেলিয়াকে উপহার দেয়া হয়। এরপরই সেখানে থাকা ৬০ হাজারটি সংগ্রহ ঘেটে দেখতে শুরু করে তারা। ওই সংগ্রহের মধ্যেই লুকানো ছিল স্টিল লাইফ চিত্রকর্মটি।
এ নিয়ে রিস্টোরেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল কনজারভেশন সার্ভিসের সিইও জুলিয়ান বিকেরস্টেথ বলেন, এটি একটি বিরল এবং অত্যন্ত আনন্দময় মুহূর্ত। এই চিত্রকর্মটি মূলত একটি টেবিলের যাতে রাখা রয়েছে বেশ কিছু বাদাম ও রুটি। এছাড়া আছে একটি রূপার পানপাত্র এবং কাচের বাসন।
এই চিত্রকর্মটি কে এঁকেছিল তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়না। অনেক গবেষকই বিশ্বাস করেন, এটি এঁকেছিলেন চিত্রকর গেরিট উইলেমজ হেদা। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ডাচ চিত্রকর উইলেম ক্লেসজের সন্তান। হেদা নিজেও ডাচ স্বর্ণযুগের সেরা চিত্রকরদের একজন। তবে এখনও স্টিল লাইফের আসল ইতিহাস খুঁজে বের করতে গবেষণা চলছে। এটি পিতা ও ছেলের যৌথ কাজও হতে পারে বলে মনে করেন অনেক গবেষক।
এদিকে ন্যাশনাল ট্রাস্ট অব অস্ট্রেলিয়ার এক মুখপাত্র জানান, এই চিত্রকর্মটির দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়া এখনো চলছে। তবে বিশেষজ্ঞরা এরইমধ্যে জানিয়েছেন, এর দাম কম হলেও কয়েক মিলিয়ন ডলার হবে। উইলিয়াম ক্লেসজের কাজ সাধারণত ২.৯ মিলিয়ন থেকে ৩.৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করা হয়।
সুন্দরবনের বাঘ। ছবি: সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট
সর্বশেষ ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, সুন্দরবনে বর্তমানে বাঘের সংখ্য ১১৪। ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে গণনা করে ২০১৫ সালে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সুন্দরবনে ১ থেকে দেড় লাখ হরিণ, ১৬৫ থেকে ২০০টি কুমির এবং ৪০ থেকে ৫০ হাজার বানর রয়েছে। আজ সোমবার জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এসব কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে বনমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বনের পরিমাণ মোট ভূমির ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ এবং বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ মোট আয়তনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
সরকারি দলের আ কা ম সরওয়ার জাহানের প্রশ্নের জবাবে শাহাব উদ্দিন জানান, সামাজিক বনায়নে আওতায় ১৯৮০-৮১ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত ১ লাখ ২ হাজার ৩৩৯ দশমিক ২৮ হেক্টর উডলট ও ব্লক বাগান সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭৬ হাজার ৭৫২ দশমিক ৩৬৬ কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে করে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৪ জন উপকারভোগীকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
সরকারি দলের সাংসদ হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মোট পরিসম্পদের পরিমাণ ৩৯১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্থায়ী সম্পদ ১ কোটি ৬১ লাখ, বিনিয়োগ (এফডিআর) ২৩৪ কোটি ৭৫ লাখ এবং চলতি সম্পদ ১৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে কল্যাণ ট্রাস্ট আয় করেছে ৫২ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং ব্যয় করেছে ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। নিট লাভ হয়েছে ২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
সরকার দলের মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানান, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং সাধারণ মিলে ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ ৬ হাজার ৯৬৩ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার ৮২৩ টাকা আদায় হয়েছে।
সরকারি দলের হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সেনাকল্যাণ সংস্থা ৯৩ কোটি টাকা নিট লাভ করেছে। এ সময় মোট লাভ করে ৩৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ব্যয় হয় ২৫৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আয়কর প্রদান করে ২০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
১৭২১ সালের ঘটনা। স্মলপক্স বা গুটি বসন্তের ভাইরাস বোস্টনের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। শেষ পর্যন্ত শহরের ১১,০০০ বাসিন্দার প্রায় অর্ধেককে সংক্রামিত করেছিল এবং প্রায় ৮৫০ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছিল। যদিও ভ্যারিওলেশন ( variolation)- এর জন্য অনেক বোস্টোনিয়ান সেইসময়ে মারাত্মক ভাইরাস থেকে বেঁচে যান। ভ্যারিওলেশন হল টিকা দেওয়ার একটি প্রাচীন পদ্ধতি। যা প্রথমে রোগী বা সাম্প্রতিক পরিবর্তনশীল ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া উপাদানের সাহায্যে সুস্থ ব্যক্তিদের টিকা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয় এই আশায় যে এটি শরীরে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। ইচ্ছাকৃতভাবে ত্বকের কাটা অংশ, কিংবা নাক দিয়ে শ্বাস নেয়ার মাধ্যমে অল্প পরিমাণে গুটিবসন্তের জীবাণু প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয় সুস্থ মানুষের শরীরে। এই পদ্ধতি আসলে জনপ্রিয় হয় নিউ ইংল্যান্ডের প্রচারক কটন ম্যাথারের হাত ধরে ।
সালেম জাদুকরী বিদ্যায় ( witch trials) পারদর্শী ছিলেন। আসলে ওনেসিয়ামাস নামে একজন ক্রীতদাস যিনি পশ্চিম আফ্রিকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি ম্যাথারকে এই পদ্ধতির কথা জানান । যদিও ওনেসমিয়াসকে সর্বজনীনভাবে আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি, ম্যাথার একটি ডায়েরিতে লিখে গেছেন যে আসলে ওনেসমিয়াসই প্রথম এই পদ্ধতির পরামর্শ দিয়েছিলেন। ওনেসমিয়াস বলে গেছেন যে ইচ্ছাকৃতভাবে একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রামিত রোগীর থেকে অল্প পরিমাণে গুটিবসন্তের ভাইরাস পুশ করলে তা শরীরের মধ্যে রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তোলে। বিএমজে কোয়ালিটি অ্যান্ড সেফটি-তে প্রকাশিত একটি জার্নাল অনুসারে, ওনেসমিয়াসের গুটিবসন্ত সম্পর্কে জ্ঞান আমেরিকান ইতিহাসে প্রথম টিকা সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করেছিল ।
১৭২১ সাল নাগাদ তুরস্ক, চীন এবং ভারতেও সফল ভ্যারিওলেশন পদ্ধতি চালু হয় । তুরস্কে এই চিকিৎসা থেরাপি সম্পর্কে জেনে আসার পর গ্রেট ব্রিটেনে গুটিবসন্তের চিকিৎসা শুরু করেন লেডি মেরি ওয়ার্টলি মন্টেগু। যদিও ওনেসমিয়াসের চিকিৎসা অভিজ্ঞতা বস্টন মহামারীর সময় অগণিত জীবন বাঁচিয়েছিল, তবুও বহু শতাব্দী ধরে চিকিৎসা ইতিহাস থেকে তাঁর নাম বাদ পড়েছিল। যদিও আজ ইতিহাসবিদদের হাত ধরে কালের গহ্বরে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলির নাম প্রকাশ্যে আসছে। রিড কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক মার্গট মিনারডি এনবিসি বোস্টনকে বলেছেন, “ওনেসমিয়াসের গল্প থেকে একটি জিনিস শিখতে হবে তা হল যে বর্ণবৈষম্য এবং পক্ষপাতদুষ্টতার কারণে প্রায়শই কিছু মানুষের জ্ঞান, শ্রম এবং অভিজ্ঞতা প্রচারের আলোয় আসে না। অন্ধকারেই থেকে যায়। ” যখন ওনেসমিয়াস আমেরিকাতে ভ্যারিওলেশন বা প্রাচীন টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন, অনেক ছাত্র ওনেসিমাসের ইতিহাস বা আমেরিকাতে আধুনিক বিজ্ঞান চর্চায় তাঁর মত একজন ক্রীতদাসের অবদান সম্পর্কে অবগত ছিলেন না । আমেরিকায় আফ্রিকানদের ক্রীতদাস বানানোর ভূমিকা নিয়ে পাবলিক স্কুলের ছাত্রদের বইতে যা পড়ানো হত বা রাষ্ট্র যা বোঝাতো তাই তারা শিখতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্ব নিয়ে কি শেখানো হত তা জানতে সাউদার্ন পোভার্টি ল সেন্টার ১২ টি মার্কিন ইতিহাসের ওপর লেখা বই, ১,৭০০ বেশি ইতিহাস শিক্ষক এবং ১,০০০ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়রদের ওপর সমীক্ষা চালায়। তাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে অনেক শিক্ষাবিদ আমেরিকান দাসত্বের ইতিহাস শেখানোর জন্য পর্যাপ্তভাবে তৈরী নন, ৫০% এরও বেশি রিপোর্ট করেছেন যে তাদের পাঠ্যপুস্তকের বিষয়টির কভারেজ অপর্যাপ্ত ছিল।
ওনেসমিয়াসের গল্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞানের ইতিহাস সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করে: আফ্রিকান এবং আফ্রিকান বংশোদ্ভূ্ত লোকেরা কী ধরনের চিকিৎসা এবং বোটানিকাল জ্ঞানের অধিকারী ছিল এবং তারা কীভাবে আধুনিক বিজ্ঞানে অবদান রেখেছিল? এমনকি যখন তাদেরকে তাদের মাতৃভূমি থেকে নির্মমভাবে বহিস্কার করা হয়েছিল , তখন ক্রীতদাস আফ্রিকানরা ব্রিটেন, ইউরোপ এবং আমেরিকায় তাদের মূল্যবান চিকিৎসা জ্ঞানের নমুনা তুলে ধরেছিল । আফ্রিকান চিকিৎসা পদ্ধতি ভারত এবং চীনের মতোই বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলির মধ্যে একটি। লোকেরা যখন আফ্রিকার কথা চিন্তা করে তখন তারা অনেকেই এই বিষয়টি জানে না, সারা বিশ্বের ৮০% মানুষ তাদের ট্রাডিশনাল ওষুধ ব্যবহার করে। রয়্যাল সোসাইটির কাছে পাঠানো ঘানার কেপ কোস্ট ক্যাসেলের তৎকালীন মন্ত্রী জন স্মিথ এবং মিস্টার ফ্লয়েড- এর নথি অনুসারে, আমেরিকাতে স্থানান্তরিত হওয়ার আগে অন্ধকূপে আটকে রাখা হয়েছিল আফ্রিকান ক্রীতদাসদের । যেহেতু রয়্যাল আফ্রিকান কোম্পানির কর্মচারীদের আয়ুষ্কাল ছিল মাত্র চার থেকে পাঁচ বছর, মন্ত্রীরা মৃত্যু কমানোর জন্য এবং কর্মচারীদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির সন্ধান করছিলেন, পাশাপাশি বাণিজ্যিক ওষুধের জন্য নতুন বোটানিকাল ওষুধের সন্ধানও করছিলেন। পশ্চিম আফ্রিকানরা দাঁতকে সুস্থ ও সাদা রাখতে কোন গাছের ছাল ব্যবহার করেন আমেরিকানদের কাছে তাও ছিল গভীর আগ্রহের বিষয়।
ঘানার কেপ কোস্ট ক্যাসেলের মন্ত্রী জন স্মিথ বর্ণনা করেছেন যে আফ্রিকানরা কীভাবে “unnena plant” সেদ্ধ করে সেটিকে শরীরের কেটে যাওয়া বা ফোলা অংশে লাগাতেন প্রদাহ কমাতে। পাম তেল এবং পাম ওয়াইন উভয়ই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত। কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর জন্য পাম ওয়াইন সিদ্ধ করা unnena গাছের সাথে মেশানো হত এবং ঘা এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য গাছের পাতাগুলিকে থেঁতলে পাম তেলের সাথে মিশ্রিত করে মলম তৈরি করা হত । ক্রীতদাস আফ্রিকানদের কাছ থেকে স্মিথও “পোকুমা উদ্ভিদ” থেঁতো করে, শুকিয়ে সেবন করে আমাশয়ের জন্য একটি চিকিত্সা পদ্ধতি শিখেছিলেন । এখানেই শেষ নয়- পাকস্থলীর ব্যথা, গুটিবসন্ত, কৃমি, যৌনরোগ, দাঁতের ব্যথা, স্কার্ভি এবং রক্তক্ষরণের চিকিৎসাগুলি পশ্চিম আফ্রিকার বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শিখেছিলেন স্মিথ। কিন্তু পশ্চিম আফ্রিকার বোটানিকাল এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের নাম আজও রয়্যাল সোসাইটিতে অনুপস্থিত। কেপ কোস্ট ক্যাসলের প্রধান বণিক জেমস ফিপসের কাছে পশ্চিম আফ্রিকার চিকিৎসা অনুশীলনগুলি প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। লন্ডনের নিয়োগকর্তাদের কাছে তিনি লিখেছেন : ” আমরা একজন দক্ষ উদ্যানপালকের সহায়তা পেয়ে আনন্দিত , যিনি ভেষজগুলির সাথে ভালভাবে পরিচিত। আমরা বিশ্বাস করি যে এখানে এমন অনেক জিনিস পাওয়া যেতে পারে যা খুবই উপকারী, যা স্থানীয়দের দ্বারা ফার্মেসিতে ব্যবহার করতে দেখা যায়, সেইসাথে সার্জারিতেও সুফল মেলে ।” “Bitter Roots” নামক বইতে আবেনা ডোভ ওসেও-আসারে বর্ণনা করেছেন কিভাবে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে, আফ্রিকান দেশগুলিতে পাওয়া ঔষধি গাছের ক্ষমতা নিয়ে বিজ্ঞানী এবং নিরাময়কারী মধ্যে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান ছিল । অনেক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি আবার এর মধ্যেই মুনাফা তৈরী করেছে এই নিরাময়কারী উদ্ভিদগুলির পেটেন্ট দাবি করে।
যদিও অতীতের ইতিহাসবিদরা ওনেসমিয়াসের মতো ক্রীতদাসদের গল্প এবং কেপ কোস্ট ক্যাসলের পশ্চিম আফ্রিকান বোটানিকাল এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের উপেক্ষা করেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিককালে বোস্টন ম্যাগাজিন ওনেসমিয়াসকে ১০০ জন সেরা বোস্টোনিয়ানদের মধ্যে একজন বলে উল্লেখ করেছে । ” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষাবিদরা খুব অল্প বয়স থেকেই এই ইতিহাসগুলি শেখানো শুরু করতে পারেন পড়ুয়াদের এবং ওনেসমিয়াসের মতো গল্পগুলি সম্পর্কে জানলে শিশুদেরও বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহ বাড়বে।
”ইতিহাসের অন্যতম এবং প্রায় অক্ষত আশ্চর্য মিশরের পিরামিড। এর সুবিশাল উচ্চতা ও শৈলীর সামনে দাঁড়ালে বাক্রুদ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না”
গিজা শহরের এক প্রান্তে গিজা মালভূমি। জগদ্বিখ্যাত চারকোনা বিশালাকৃতি ইমারতগুলো তার উপরেই। শহরের রাস্তা ধরে এগোতে থাকলে অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে এই চত্বর— গিজা পিরামিড কমপ্লেক্স। কেমন লাগে? বলা মুশকিল। প্রথম যখন নিজের চোখে দেখলাম, তখন রোমাঞ্চই বেশি হচ্ছিল। ছোটবেলা থেকে বইয়ে পড়া এক রহস্যঘেরা ইতিহাস আচমকা সাকার হয়ে উঠলে বোধহয় তেমনই হওয়ার কথা।
দূর থেকে খুব স্পষ্ট বোঝা যায় না পিরামিডগুলো। রোদ আর ধুলো মিলিয়ে দৃষ্টিপথ ঝাপসা। মালভূমি বেয়ে যখন তার সামনে পৌঁছলাম, তখন যেন নিজে থেকেই বিস্ময়সূচক শব্দ বেরিয়ে এল মুখ থেকে! বাক্রুদ্ধ হয়ে যাওয়াও আশ্চর্য নয়। স্বদেশে তাজমহল দেখেছি, ভিনদেশে বরোবুদুর, সব বিরাট বিরাট সৌধ, কিন্তু কখনও এত বড় এবং বিচিত্র কোনও সৃষ্টি দেখেছি বলে মনে করতে পারলাম না। বহু মাথা খাটিয়েও এই মাপের আন্দাজ পাওয়া কঠিন। এক-একটা চৌকো পাথর ১০-১৫ টন, সে রকম হাজার হাজার পাথর দিয়ে উঠে গিয়েছে এক বিশাল চারকোনা সৌধ। মিশরে অনেকেই বিশ্বাস করেন, পিরামিড মানুষের তৈরি নয়, ভিনগ্রহের প্রাণীদের বানানো! এ রকমও প্রচলিত যে, কোনও জাদুমন্ত্র বলে পাথরগুলোর ওজন শূন্য করে ফেলে সেগুলো পরপর সাজিয়ে পিরামিড বানানো হয়েছিল! এ সব কথাও কেন ভিতর থেকে বিশ্বাস করা সম্ভব, পিরামিডের সামনে না পৌঁছলে বুঝতাম না।
তবু যুক্তি দিয়ে ভাবতে তো হবেই। জানলাম, কিছু পাথর এসেছিল ওই এলাকার খনি থেকে, বাকিটা দক্ষিণ মিশরের আসোয়ান থেকে নীলনদ হয়ে। সেই সব পাথর কী ভাবে সাজানো হয়েছিল কিংবা অত উঁচুতে তোলা হয়েছিল, তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত নন ইতিহাসবিদেরা। তবে অনেক রকম জ্যামিতিক হিসেবের কথাই বলা হয়। কেন তৈরি হয়েছিল পিরামিড? প্রাচীন মিশরীয়রা জন্মান্তরে বিশ্বাস করত। সেই সভ্যতার চতুর্থ রাজবংশের আমলে তাই গিজা মালভূমির উপরে তৈরি হয় এই আশ্চর্য সমাধিক্ষেত্র। সেখানেই আছে তিন ফারাও খুফু, খাফরে আর মেনকাউরে-র বিরাট পিরামিডগুলো। আছে স্ফিংস, আরও অনেক সমাধি এবং শিল্প-শ্রমিকদের গ্রাম। প্রাচীন কালের পৃথিবীর সাত আশ্চর্যের মধ্যে পিরামিডই সবচেয়ে পুরনো এবং অনেকাংশে অক্ষত।
তবে খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬০ অব্দে একদল লোক ভাবল, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সৌধ বানাবে, যা উচ্চতায় ৪৮১ ফুট আর চওড়ায় ৭৫৬ ফুট। আর তা বানিয়েও ফেলল, এটা বিশ্বাস করতে সত্যি একটু অস্বস্তি হয়। তারা তো যেমন-তেমন করে বানায়নি। পিরামিডগুলোর উপরে ছিল আলাবাস্তার চুনাপাথরের আবরণ। তার ফলে অত বড় ইমারতগুলো সব সময়ে চকচক করত। এখন আমরা যা দেখে এত অবাক হই, তা কিন্তু কেবল ভিতরের কঙ্কাল। উচ্চতাও সেই সময়ের চেয়ে ২৬ মিটার কম। আসলে মৃত মানুষকে জীবন্তের মতো করে রেখে দেওয়ার জন্য ৭০ দিন ধরে এক কঠিন চিকিৎসাপ্রণালী— মমিফিকেশন— চালানোও তো প্রায় অবিশ্বাস্য এক ব্যাপার। সেই মমিকে রাখার ঘর, পিরামিড যে আরও তাজ্জব হবে, তা আর বেশি কথা কি!
ফারাও খুফুর পিরামিডটাই আকারে সবচেয়ে বড়, তার নাম গ্রেট পিরামিড। পাথরের ধাপে ধাপে এর গা বেয়ে কিছুটা ওঠা যায়। ভিতরে নামার ব্যবস্থাও আছে। তবে পিরামিডে নামার উত্তেজনাটুকু ছাড়া বাকিটা বেশ কষ্টকর। ভিতরেও কিচ্ছু নেই। ফারাওদের আমলে পিরামিডের ভিতরে যে মমি এবং ধনরত্ন থাকত, তার বেশির ভাগই লুঠ হয়ে গিয়েছে, বাদবাকিটা এখন মিউজ়িয়ামে।
খুফুর পিরামিডের সামনে থেকে ঘোড়ার গাড়িতে উঠলাম। বাকি দুই পিরামিড পেরিয়ে সেটা চলল একেবারে সাহারা মরুভূমির ভিতরে, একটা বালির পাহাড়ের দিকে। সেখান থেকে গোটা মালভূমির একটা প্যানোরোমিক ভিউ পাওয়া যায়। একসঙ্গে তিনটে বড় পিরামিড এবং তার সঙ্গে তিনটে ছোট পিরামিড মিলিয়ে গোটা চত্বরটা দেখা যায়। গিয়ে দাঁড়ানোর পরে যে দৃশ্য দেখলাম, তার বর্ণনা করতে গেলে লালমোহনবাবুর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া উপায় নেই— ‘সাহারায় শিহরণ’! ধু ধু মরুভূমির মধ্যে ছ’টা পিরামিড, পাশ দিয়ে এক চিলতে রাস্তা। এই দৃশ্য দেখার জন্যই তো মিশরে আসা।
গিজার পরে মেম্ফিস-সাকারা না গেলে ভ্রমণ শেষ হয় না। গিজার দক্ষিণে ফারাওদের রাজধানী ছিল মেম্ফিস। গিজা থেকে দাহশুর পর্যন্ত যতগুলো পিরামিড চত্বর আছে, পুরোটা মিলিয়েই ইউনেসকো ওয়র্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এই সমস্ত সমাধিক্ষেত্র মেম্ফিস শহরকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল। এই এলাকায় সবুজ কিছু বেশি। অধুনা গঞ্জ শহর, একটা খালের ধার ধরে অনেকটা রাস্তা যেতে হয়। দ্রষ্টব্য বলতে ওপেন এয়ার মিউজ়িয়াম। সেখানে ফারাও দ্বিতীয় রামসেসের অনেক মূর্তি আছে, আছে সে যুগের কিছু হায়রোগ্লিফিক্স লেখা এবং সমাধির অন্যান্য নমুনা।
সাকারায় আছে ফারাও জ়োসেরের বিখ্যাত স্টেপ পিরামিড। এটাও মরুভূমির মধ্যে, শহর ছাড়িয়ে একটু উঁচুতে। সাকারার কিছু সমাধির ভিতরে অবশ্য দেওয়াল জুড়ে ছবি আঁকা এবং হায়রোগ্লিফিক্সে লেখা দেখতে পেলাম।
এ সব ছবি খুব অপরিচিত বলব না। বাঙালি ছেলেবেলার সঙ্গে মিশরের প্রতি টান পরতে পরতে জড়িয়ে। তাই জানাও। খানিকটা ইতিহাস বইয়ে, খানিকটা রহস্যে। তাকে চাক্ষুষ করার পরে যে ঘোর লাগবে, তা বলাই বাহুল্য।
We use cookies to optimize our website and our service.
Functional
Always active
The technical storage or access is strictly necessary for the legitimate purpose of enabling the use of a specific service explicitly requested by the subscriber or user, or for the sole purpose of carrying out the transmission of a communication over an electronic communications network.
Preferences
The technical storage or access is necessary for the legitimate purpose of storing preferences that are not requested by the subscriber or user.
Statistics
The technical storage or access that is used exclusively for statistical purposes.The technical storage or access that is used exclusively for anonymous statistical purposes. Without a subpoena, voluntary compliance on the part of your Internet Service Provider, or additional records from a third party, information stored or retrieved for this purpose alone cannot usually be used to identify you.
Marketing
The technical storage or access is required to create user profiles to send advertising, or to track the user on a website or across several websites for similar marketing purposes.