প্রতি বছর সারাবিশ্বে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয় স্ট্রোকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবনচর্চা আর খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারলে অনেকটাই কমানো যেতে পারে প্রাণঘাতী এই রোগের ঝুঁকি।
সম্প্রতি স্ট্রোক প্রতিরোধে আরও একটি দিক উন্মোচিত করলেন বিজ্ঞানীরা। স্পেনের একদল গবেষকের দাবি, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারলে অনেকটাই কমে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
স্পেনের কাতালোনিয়ার গবেষকরা ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখেছেন। গবেষণা বলছে, যে ব্যক্তিরা অরণ্য কিংবা ঘন গাছপালা রয়েছে এমন প্রাকৃতিক পরিবেশের ৩০০ মিটারের মধ্যে বসবাস করেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ১৬ শতাংশ কম।
কিন্তু কেন এমন হয়? নিশ্চিতভাবে বলতে না পারলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, প্রকৃতির পরশ একাধিক উপায়ে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ও চাপ কমাতে চারপাশে গাছপালা থাকা খুবই জরুরি। পাশাপাশি আশেপাশে বাগান থাকলে মানুষের মধ্যে হাঁটাহাঁটির উৎসাহও বৃদ্ধি পায়। যা শারীরিকভাবেও ভাল রাখে শরীর। পাশাপাশি, গাছপালা বেশি থাকলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা কম থাকে। গবেষকদের দাবি, পরিবেশ দূষণের মাত্রা বাড়লে বেড়ে যেতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও।
পদ্মা নদীর পারে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়ায় ‘ইকোপোর্ট’ নির্মাণে প্রকল্প হাতে নিয়েছে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের আওতায় রিভারক্রুজ (নদী ভ্রমণ), চরে অবকাশ যাপনকেন্দ্র, প্রাকৃতিক ওয়াকওয়ে ট্রেইল, নৌজাদুঘর, ইকোপার্কসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা তৈরি করা হবে।
পদ্মা সেতু কেন্দ্র করে সেখানে বছরে ৬০ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটকের সমাগম হবে-এমন ধারণা থেকে এ বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর শিমুলিয়ায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অব্যবহৃত ১৫-১৮ একর জমিতে এসব স্থাপনা তৈরি হবে।
এতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এটি নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা করেছে বিআইডব্লিউটিএ। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে রোববার অনুষ্ঠিত এক পর্যালোচনা সভায় এ প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করে বিআইডব্লিউটিএ। নৌপরিবহণ সচিব মো. মোস্তফা কামাল এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। ওই সভায় কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে বিআইডব্লিউটিএকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক যুগান্তরকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর শিমুলিয়া এলাকায় বিআইডব্লিউটিএর কার্যক্রম অনেক সীমিত হয়ে পড়বে বলে ধারণা করছি। পদ্মা সেতু ও নদী দেখতে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সেখানে যাবেন।
পর্যটকদের জন্য আধুনিক বন্দর সুবিধা নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সেখানে আধুনিক নৌবন্দর, নদী ভ্রমণে আধুনিক নৌযান, পর্যটকদের নৌনিরাপত্তা সামগ্রী ও নদীর তীরভূমিতে বসার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া নৌ ঐতিহ্য সংবলিত জাদুঘরও নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। জানা গেছে, শিমুলিয়া নদী বন্দর ২০২০-২১ অর্থবছরে এক কোটি ৪০ লাখ যাত্রী ও ৩০ লাখ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহণ হয়েছে।
ওই বছরে এ ঘাট ইজারা থেকে বিআইডব্লিউটিএর আয় হয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ ১২ হাজার ৩৭৬ টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। পদ্মা সেতু চালুর পর সেখানে গাড়ি ও যাত্রী পারাপার কমে যাবে।
এমন বাস্তব পরিস্থিতিতে নতুন আয়ের উৎস বের করতে শিমুলিয়ায় ইকো বন্দর প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যদিও পদ্মা সেতু চালুর পরও শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে সীমিত আকারে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট সার্ভিস চালু রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে শিমুলিয়ায় এ ইকো বন্দর নির্মাণ করা হবে। এ ধরনের বন্দর বাংলাদেশে এটিই প্রথম। সেতু চালুর পর শিমুলিয়া ঘাটের ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট সার্ভিস সীমিত হয়ে পড়বে।
কমে যাবে গাড়ি ও মানুষের যাতায়াত। তখন বিআইডব্লিউটিএর ১৫ থেকে ১৮ একর জমি অব্যবহৃত অবস্থায় থাকবে। ওই জমিতে এ পার্ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সরকার জমি দেবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণ করবে। এই ইকোপার্কের ইকোনমিক লাইফ ধরা হয়েছে ৩০ বছর। তবে এসব স্থাপনা নির্মাণে নদীভাঙন অন্যতম ঝুঁকি বিবেচনা করা হচ্ছে।
আরও জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় পদ্মার চরে অবকাশযাপনকেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনা করা হয়েছে। মাওয়া বা শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ভাটিতে অবস্থিত এ চরে প্রায় ৬ বর্গকিলোমিটার চর এলাকা রয়েছে। ওই চরেই বিশেষ পর্যটন কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
এ চরে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৮ ফুট প্রশস্ত প্রাকৃতিক হাঁটার ট্রেইলর রাখা হয়েছে। এতে পর্যটকরা একমুখী হাঁটতে পারবেন এবং নদীর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া সেখানে একটি নৌজাদুঘর স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় পদ্মার চরে বাণিজ্যিক ফুলের গ্রাম গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই ফুলের বাগানে বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষের ব্যবস্থা থাকবে। বিনোদনের জন্য একটি ইকোপার্কও নির্মাণ করা হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশে সেখানে হরিণ ও প্রাণীদের আবাসস্থল অথবা মিনি চিড়িয়াখানা করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইকোপার্কে প্রবেশ ও বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতে নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হবে পর্যটকদের। তবে ফির হার এখনো নির্ধারণ হয়নি। প্রকল্পের ব্যয় ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে ফির হার নির্ধারণ করা হবে। ইকো বন্দরের আয়ের অংশভিত্তিক পাবে বিআইডব্লিউটিএ।
পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে রোড মার্কিং শেষ : পদ্মা সেতুর নর্থ ভায়াডাক্টের রোড মার্কিং রোববার শেষ হয়েছে। মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতুতে প্রবেশের এই অংশটিতে শুক্রবার থেকে রোড মার্কিং চলছিল। তবে বৃষ্টির কারণে কাজে বিলম্ব হয়।
মূল সেতুর এক নম্বর মডিউলে সোমবার রোড মার্কিং শুরু হয়েছে। এই মডিউলে পশ্চিম পাড়ের লেনে (উজান সাইড) রোড মার্কিং চলবে। এখানে বৈদ্যুতিক কেবল থাকায় আগে মার্কিং করা হয়নি।
স্বপ্ন জয়ের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সবশেষ প্রস্তুতির সঙ্গে চলছে রেললাইনের কর্মযজ্ঞও। সেতুর জাজিরা প্রান্তে পাথরবিহীন রেললাইনের জন্য বসানো হচ্ছে স্লিপার। দেশের প্রথম এই আধুনিক রেললাইন নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মীরা। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার প্রকল্প শেষ হবে ২০২৪ সালে।
উদ্বোধনের পর মূল পদ্মা সেতুতে জুলাই থেকে রেললাইন বসানো শুরু হবে। এর প্রস্তুতি হিসাবে জাজিরা প্রান্তে রেল ভায়াডাক্টে পাথরবিহীন রেললাইন বসানোর কাজ চলছে। রেল সংযোগ সেতুর রেললাইন বসানোর অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। ভাঙ্গা থেকে মাওয়া অংশে কাজের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ।
পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্পের পরামর্শক লে. কর্নেল এইচএম তহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতুর সড়কপথ উদ্বোধন কেন্দ্র করে আমরা সেতুর রেললিংক প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে কাজ করছি।
ভায়াডাক্ট ২ ও ৩ এ পাথরবিহীন ট্র্যাক বসানোর কাজ চলমান। তা যেন সময়ের আগেই শেষ করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সেতু উদ্বোধের পর কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে আমরা সেতুর ভেতরের অংশে কাজ করব।
We use cookies to optimize our website and our service.
Functional
Always active
The technical storage or access is strictly necessary for the legitimate purpose of enabling the use of a specific service explicitly requested by the subscriber or user, or for the sole purpose of carrying out the transmission of a communication over an electronic communications network.
Preferences
The technical storage or access is necessary for the legitimate purpose of storing preferences that are not requested by the subscriber or user.
Statistics
The technical storage or access that is used exclusively for statistical purposes.The technical storage or access that is used exclusively for anonymous statistical purposes. Without a subpoena, voluntary compliance on the part of your Internet Service Provider, or additional records from a third party, information stored or retrieved for this purpose alone cannot usually be used to identify you.
Marketing
The technical storage or access is required to create user profiles to send advertising, or to track the user on a website or across several websites for similar marketing purposes.