ঘুরে আসুন শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ি । কুষ্টিয়া শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে কুমারখালি উপজেলার অর্ন্তগত শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরেশদপুর কুঠিবাড়ি অবস্হিত।
পুরো ভবনটি এখন জাদুঘর হিসেবে দর্শকদের জন্যে উম্মুক্ত । জাদুঘরের নীচ ও দ্বিতীয় তলায় ১৬টি কক্ষেই কবি রবীন্দ্রনাথ, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, কৃষক বন্ধু রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ নানা বয়সের বিচিত্র ভঙ্গির রবীন্দ্রনাথের ছবি । বাল্যকাল থেকে মৃতু্শয্যার ছবি পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে । তাছাড়াও রয়েছে শিল্পকর্ম এবং তাঁর ব্যবহার্য আসবাবপত্র দিয়ে পরিপাটি দিয়ে সাজানো ।
কবি ভবনে ব্যবহার্য জিনিসপত্রগুলোর মধ্যে আরো আছে চঞ্চলা ও চপলা নামের দুটো স্পিডবোট, পল্টুন, ৮বেহারা পালকি, কাঠের চেয়ার, টি টেবিল, সোফাসেট, আরাম চেয়ার, পালংক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস।
বন্ধ–খোলারসময়সূচীঃ
গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেল্লা খোলা থাকে। মাঝখানে দুপুর ১টা থেকে ১.৩০ পর্যন্ত আধ ঘণ্টার জন্যে বন্ধ থাকে। আর শীতকালে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
শীতকালেও দুপুর ১টা থেকে ১.৩০ পর্যন্ত বন্ধ থাকে। আর সবসময়ের জন্যেই শুক্রবারে জুম্মার নামাযের জন্যে সাড়ে বারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। রবিবার সাধারণ ছুটি এবং সোমবার বেলা ২.০০ থেকে খোলা থাকে। এছাড়াও সরকারী কোন বিশেষ দিবসে জাদুঘর থাকে ।
চাঁদপুরের পুরান বাজারে যেসব স্থাপনা ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে তার মধ্যে অন্যতম পুরান বাজার জামে মসজিদ। দোতলা ভবনের এ মসজিদের গায়ে রঙিন কাচ ও পাথর দিয়ে কারুকাজ আছে। শতবর্ষের এ মসজিদের মিনারটিও বেশ উঁচু। এছাড়া দেড়শ’ বছরের বাজারের মন্দিরটিও আছে এখানকার ঐতিহ্যের তালিকায়। পুরান বাজার জামে মসজিদ দেখতে অনেকটা মুঘলদের মসজিদের মতন। এর কারু কাজ দেখতে অনেকটা পুরান ঢাকার মসজিদের মতন। অনেক লোক সমাবেত হয়ে নামাজ পড়ে। দূর-দূরান্তের অনেক মানুষ নামাজ পড়ে এই মসজিদে। এই মসজিদের কারুকাজ গুলো ইতিহাসের সাক্ষী বয়ে নিয়ে যায়। কারু কাজের নিদর্শন গুলো অনেক মানুষকে মুগ্ধ করে তুলে ।
চালপট্টি, ডালপট্টি, যুগিপট্টি, মনিহারিপট্টি, আমপট্টি, বাতাসাপট্টি, ট্রাঙ্কপট্টি, তেলপট্টি, ফলপট্টি, তামাকপট্টি, আড়তপট্টি, সুতাপট্টি, খলিফাপট্টি, টিনপট্টি, ঘোষপট্টি, বানিয়াপট্টি কিংবা মশলাপট্টি। এমন অনেক পট্টি আছে চাঁদপুরের পুরান বাজারে। আর এ পট্টি মানে গলি বা সড়ক। যে পণ্যের নামে যে পট্টি, সেই পণ্য পাওয়া যাবে সেই পট্টিতে। তাই নির্দিষ্ট কোনো পণ্যের প্রয়োজন হলে পুরো বাজার না ঘুরে নির্দিষ্ট পট্টিতে গেলেই পণ্যটি মিলবে।
ছেলেবেলায় এ বাজারে অনেক এসেছি। তারপর দীর্ঘ বিরতি। ঘুরে ঘুরে পট্টির আড়ত বা দোকানগুলোতে বেচাকেনা দেখি। পাইকারি বা খুচরা সব রকম বেচাকেনাই চলে এখানে। অবশ্য পাইকারির দোকান বা প্রতিষ্ঠানই এ বাজারে বেশি। ডাল-চাল, তেল-নুন থেকে শুরু করে পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ কিংবা মাছ-মাংস, পোশাক-প্রসাধনী সবই মেলে এখানে। তবে সুতা, জাল কিংবা মাছ ধরার সরঞ্জামের দোকানের সংখ্যা এখানে তুলনামূলক বেশি। কারণ এ অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ মেঘনায় ইলিশমাছ ধরার কাজে সম্পৃক্ত। মাছ ধরার সরঞ্জাম বেশি আছে বাজারের যুগি পট্টিতে। এ পট্টির অনেক দোকানের সামনে দেখি মাছ ধরার জাল সেলাই করছেন সেলাইয়ের কারিগর। স্থানীয়রা সেলাইয়ের কারিগরকে খলিফা বলেন।
বাজারের পশ্চিমে মেঘনা আর উত্তরে ডাকাতিয়া নদী। দুটি নদীর ঠিক পাড় ঘেঁষেই বাজারের অবস্থান। মূলত ডাকাতিয়া এসে মিশেছে মেঘনায়। আবার অন্যদিক থেকে পদ্মার মিলনস্থলও এ মেঘনা-ডাকাতিয়া। তাই এটি তিন নদীর মোহনাও বলা চলে। আর এ তিন নদীর মোহনাতেই পুরান বাজার দাঁড়িয়ে আছে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে।
এ বাজার চাঁদপুরের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। চাঁদপুরের শিল্প-কারখানাও এ বাজারকেন্দ্রিক। তিন-চার দশক আগেও এ বাজার আরও জমজমাট ছিল। সে তুলনায় এখন কিছুটা কমতি। এর কারণ নদীর ভাঙনে বাজার ছোট হয়ে আসা। অন্যদিকে ডাকাতিয়া নদীতে সেতু হওয়ায় চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার জমজমাট হয়েছে। ফলে কিছুটা রমরমা হারিয়েছে পুরান বাজার। তবে একেবারে মিলিয়ে যায়নি। সকাল-সন্ধ্যা হাঁক-ডাক বা শোরগোল এখনও বজারে প্রাণের সঞ্চার সৃষ্টি করে। এখনও এ বাজারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার দোকান আছে চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির হিসাব অনুযায়ী।
লবণ বাণিজ্যের জন্য এ বাজার এক সময় বেশ পরিচিত ছিল। এখনও আছে, তবে আগের মতো নয়। এখনও এ বাজার এ অঞ্চলের চাল, ডাল, তেল, নুন বা বিভিন্ন শস্যজাতীয় পণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার বলেই গণ্য।
পুরান বাজারে যেসব স্থাপনা ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে তার মধ্যে অন্যতম পুরান বাজার জামে মসজিদ। দোতলা ভবনের এ মসজিদের গায়ে রঙিন কাচ ও পাথর দিয়ে কারুকাজ আছে। শতবর্ষের এ মসজিদের মিনারটিও বেশ উঁচু। এছাড়া দেড়শ’ বছরের বাজারের মন্দিরটিও আছে এখানকার ঐতিহ্যের তালিকায়। পুরান বাজার জামে মসজিদ দেখতে অনেকটা মুঘলদের মসজিদের মতন। এর কারু কাজ দেখতে অনেকটা পুরান ঢাকার মসজিদের মতন। অনেক লোক সমাবেত হয়ে নামাজ পড়ে। দূর-দূরান্তের অনেক মানুষ নামাজ পড়ে এই মসজিদে। এই মসজিদের কারুকাজ গুলো ইতিহাসের সাক্ষী বয়ে নিয়ে যায়। কারু কাজের নিদর্শন গুলো অনেক মানুষকে মুগ্ধ করে তুলে ।
ভারতবর্ষে মধ্যযুগে মুসলমানদের আগমন ঘটে বলে ধরে নেয়া হয়। বখতিয়ার খলজী কর্তৃক ১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে বঙ্গ বিজয়ের মাধ্যমে বাংলায় মুসলমান শাসনের সূচনা হয়। তবে এর আগে বারো শতকের শেষের দিকে আফগানিস্তানের ঘোরী বংশীয়দের দিল্লি অধিকারের মধ্যে দিয়ে কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলায় মুসলমানদের গোড়াপত্তন ঘটেছিল। এটা সত্য যে, বাংলায় মুসলমানদের আগমন ও মুসলিম শাসন শুরু শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বহুমাত্রিক পরিবর্তন আনে।বাংলার স্থানীয় মুসলমানদের সাথে বহিরাগত মুসলমান তথা আরব, পারস্য ও আফগানদের জীবন উপাদানের সমন্বয়ের ফলে সব ক্ষেত্রে ভারতীয় মুসলিম নামে পরিবর্তনের সূচনা হয়। এ সময় অনেক উপাদানের সাথে বাংলার স্থাপত্য শিল্পের যে বিকাশ সাধিত হয় তা মূলত
মুসলমানগণ নিয়ে এসেছিলেন ধর্মীয় প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতি রাখতে। বিশেষ করে, তৎসময়ে মুসলমানরা ইমারত নির্মাণে ক্ষেত্রে কাঠামো পরিকল্পনার সাথে যে নির্মাণশৈলী ফুটিয়ে তুলেছে তাতে ভারতীয়দের কোন পরিচয় ছিল না। তারা প্রাক-ইসলাম যুগে ব্যবহৃত রোমান-বাইজেন্টীয় ও পারসিক থেকে এমনভাবে গ্রহণ করে যে, এগুলো মুসলিম ইমারতের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়। মধ্যযুগে ধর্মীয় স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে মুসলমানদের নির্মিত মসজিদগুলো অন্যতম। মিনহাজের তবকাত-ই-নাসিরী গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, বখতিয়ার খলজী মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকা নির্মাণ করেছিলেন।
এমন একটি অনন্য মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন হলো চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ চাঁদপুর জেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে হাজীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি নির্মাণের একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অংশ হিসেবে উল্লেখ্য যে, বাংলা এগার’শ পঁছাত্তর থেকে বার’শ সালের মধ্যে হযরত মকিমউদ্দিন (রহ.) নামে এতজন বুজুর্গ অলীয়ে কামেল ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পবিত্র আরব ভূমি থেকে অত্র এলাকায় আগমন করেছিলেন। তিনি স্বপরিবারে বর্তমান বড় মসজিদের মেহরাব সংলগ্ন স্থান, যেখানে একটু উঁচু ভূমি বিদ্যমান ছিল, সেখানে আস্তানা তৈরি করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসতি স্থাপন করেন।
তিনি অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। তাঁর প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও চারিত্রিক মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে বহু লোক তাঁর কারেছ দীক্ষা নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি দু’একজন নব্য মুসলমান নিয়ে চৌধুরী ঘাটে নামাজ আদায় করতেন। হিন্দু-মুসলমান সকলের কাছে তিনি শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন।
মূলত এ এলাকায় হাজী মকিমউদ্দিন (রহ.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের মাধ্যমে ইসলামের আবাদ করেন। তারই বংশের শেষ পুরুষ হযরত মনিরুদ্দিন হাজী ওরফে মনাই হাজী (রহ.)’র দৌহিত্র আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) বাংলা তেরশ পঁচিশ থেকে ত্রিশ সালের সালের দিকে বড় মসজিদের মেহরাব বা তৎসংলগ্ন স্থান জুড়ে প্রথমে একচালা খড়ের ইবাদতখানা, অতঃপর খড় এবং গোলপাতা দিয়ে তৈরি দো’চালা মসজিদ নির্মাণ করেন।
বাংলায় মুসলমানদের আগমন ও মুসলিম শাসন শুরু শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বহুমাত্রিক পরিবর্তন আনে। বাংলার স্থানীয় মুসলমানদের সঙ্গে বহিরাগত মুসলমান তথা আরব, পারস্য ও আফগানদের জীবন উপাদানের সমন্বয়ের ফলে সব ক্ষেত্রে ভারতীয় মুসলিম নামে পরিবর্তনের সূচনা হয়। এ সময় অনেক উপাদানের সঙ্গে বাংলার স্থাপত্যশিল্পের যে বিকাশ সাধিত হয়, তা মূলত মুসলমানরা নিয়ে এসেছিলেন ধর্মীয় প্রয়োজনের সঙ্গে সংগতি রাখতে। বিশেষ করে, সে সময় মুসলমানরা ইমারত নির্মাণের ক্ষেত্রে কাঠামো পরিকল্পনার সঙ্গে যে নির্মাণশৈলী ফুটিয়ে তুলেছেন, তাতে ভারতীয়দের কোনো পরিচয় ছিল না। তাঁরা প্রাক-ইসলাম যুগে ব্যবহৃত রোমান-বাইজেন্টীয় ও পারসিক থেকে এমনভাবে গ্রহণ করেন যে সারা বিশ্বে এগুলো মুসলিম ইমারতের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়। মধ্যযুগে ধর্মীয় স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে মুসলমানদের নির্মিত মসজিদগুলো অন্যতম। এমন একটি অনন্য মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন হলো চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ। এটি চাঁদপুর জেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে হাজীগঞ্জ বাজারে অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি নির্মাণের একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অংশ হচ্ছে—বাংলা ১১৭৫ থেকে ১২০০ সালের মধ্যে হজরত মকিমউদ্দিন (রহ.) নামে একজন বুজুর্গ ওলিয়ে কামেল ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পবিত্র আরব ভূমি থেকে অত্র এলাকায় আগমন করেছিলেন। তিনি সপরিবারে বর্তমান বড় মসজিদের মেহরাবসংলগ্ন স্থান, যেখানে একটু উঁচু ভূমি বিদ্যমান ছিল, সেখানে আস্তানা তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসতি স্থাপন করেন। হিন্দু-মুসলমান সবার কাছে তিনি শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। মূলত এ এলাকায় হাজি মকিমউদ্দিন (রহ.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের মাধ্যমে ইসলামের আবাদ করেন। তাঁরই বংশের শেষ পুরুষ হজরত মনিরুদ্দিন হাজি ওরফে মনাই হাজি (রহ.)-এর দৌহিত্র আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) বাংলা ১৩২৫ থেকে ১৩৩০ সালের দিকে বড় মসজিদের মেহরাব বা তত্সংলগ্ন স্থানজুড়ে প্রথমে একচালা খড়ের ইবাদতখানা, অতঃপর খড় ও গোলপাতা দিয়ে তৈরি দোচালা মসজিদ নির্মাণ করেন। যা পরবর্তী সময়ে টিনের দোচালা মসজিদ থেকে পাকা মসজিদ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ১৭ আশ্বিন আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.)-এর পরম ইচ্ছায় হজরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.)-এর পবিত্র হাতে পাকা মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ এ অঞ্চলের অন্যতম মুসলিম নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। মসজিদটি নির্মাণকালে স্থাপত্যশিল্পের যে নির্মাণশৈলী দেওয়া হয়েছে, তা যেন স্থাপত্যশিল্পেরই বিশুদ্ধ ব্যাকরণ। মসজিদের বিভিন্ন অংশে যে কারুকাজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা কালের সাক্ষ্য বহন করছে। ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ তিন অংশে নির্মিত হয়েছে। প্রথম অংশ চার হাজার ৭৮৪ বর্গফুট, মাঝের অংশ ১৩ হাজার ছয় বর্গফুট এবং তৃতীয় অংশে এক হাজার ৬১৫ বর্গফুট। সর্বমোট ২৮ হাজার ৪০৫ বর্গফুট আয়তনের ওই মসজিদের প্রথম অংশে হজরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.) ভারী শরীর নিয়ে মাচার ওপর বসেন, তাঁর পবিত্র হাতে চুন-সুরকির মসলা কেটে কেটে মেহরাবসংলগ্ন দেয়াল ঘুরিয়ে মসজিদের প্রথম অংশের ওপরের দিকে ‘সুরা ইয়াছিন’ ও ‘সুরা জুমআ’ লিপিবদ্ধ করেন। বর্তমান সময়ে সংস্কারকালে তা উঠিয়ে মসজিদের কবরস্থানে দাফন করা হয়। ওই মসজিদের অনন্য সুন্দর মেহরাবটি কাচের ঝাড়ের টুকরো নিখুঁতভাবে কেটে কেটে মনোরম ফুলের ঝাড়ের মতো আকর্ষণীয় নকশায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মাঝের অংশটি ৭৭টি আকর্ষণীয় পিলার ও ঝিনুকের মোজাইক দিয়ে নির্মিত হয়েছিল। তৃতীয় অংশটিতে রয়েছে তিনটি বিশাল গম্বুজসহ আকর্ষণীয় বিশাল সুউচ্চ মিনার। যা মসজিদটিকে আলাদা বিশেষত্ব দান করেছে।১৯৫৩ সালে ১২৮ ফুট উঁচু এই মিনারটি তৈরি হয়েছিল। সুউচ্চ এই মিনারটিরও আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর তা হলো—মসজিদের প্রধান প্রবেশদ্বারের ওপর এত উঁচু মিনারের উপস্থিতি সেকালের নির্মাণ বিষয়টিকে ভাবিয়ে তোলে। মিনারের উঁচু প্ল্যাটফর্মে বহু মুসল্লি ও পর্যটক উঠে হাজীগঞ্জের চারপাশের দৃশ্য অবলোকন করেন। প্রতিদিন মিনারের উঁচু থেকে একযোগে মাইকে আজান প্রচার করা হয়। বহু দূরদূরান্ত থেকে এই আজানের ধ্বনি শোনা যায়। কারুকার্যখচিত মসজিদের সর্বশেষ পূর্ব প্রাচীরে পবিত্র কালেমা শরিফ খচিত চীনা বাসনের টুকরো দিয়ে তৈরি মনোরম ফুলের ঝাড়ের মতো আকর্ষণীয় করে সাজানো বিশাল ফটক। মসজিদে প্রবেশের সুবিশাল ফটকের আকর্ষণীয় সাজ দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নেয়। পাথরের সাজে সজ্জিত অসংখ্য তারকাখচিত তিনটি বড় বড় গম্বুজ পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মসজিদটি পবিত্র রমজান মাসে জুমাতুল বিদার জামাতের জন্য ঐতিহাসিকভাবে প্রসিদ্ধ রয়েছে। একসময় পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ অনন্য বৃহত্তম জুমাতুল বিদা নামাজের জামাত উদ্যাপনের প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাত ছিল। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় মসজিদটিতে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে দূরদূরান্ত থেকে অনেক কষ্ট করে লক্ষাধিক রোজাদার মুসল্লি এখনো জুমাতুল বিদা নামাজের জামাতে সমবেত হয়ে থাকে।
চাঁদপুর শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের পাশে রূপসা বাজারের পশ্চিম দক্ষিণ কোনে নজর দিলেই চোখে পড়বে জমিদার প্রাসাদ। পাশেই কারুকার্জ খচিত একটি মসজিদ।
মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি কবরস্থান। এর প্রতিটি ফলকে লেখা রয়েছে চিরনিদ্রায় শায়িত ব্যক্তিদের সুকর্মের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। পথ ধরে সামনে এগুলেই চোখে পড়বে ঘাঁট বাঁধানো দীঘি।
তবে আগের সে দীঘি এখন আর নেই। সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে জমিদার বাড়ির পুরো পরিবেশ।
গ্রামের নাম রূপসা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও সুদীর্ঘ ঐতিহ্যই এর রূপের অহংকার। প্রায় দু’শতাব্দী আগের কথা। যখন এ অঞ্চলের বেশীরভাগ জনপদগুলোতে উন্নত সভ্যতার আলোর ছোয়া পায়নি। চাদের নামে নাম চাদপুর জেলার সুপ্রাচীন জনপদ ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা গ্রাম তখনও স্নিগ্ধতায় সমৃদ্ধ ছিলো। সমৃদ্ধশালী এ গ্রামটির গৌরবময় ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে ঐ গ্রামেরই ঐতিহ্যবাহী জমিদার পরিবারের ইতিহাস।
উনিশ শতকের প্রথমভাগে মোহাম্মদ গাজী এ জমিদার পরিবারের পত্তন করেন। প্রকৃত অর্থে মোহাম্মদ গাজীর সুযোগ্য পুত্র আহমেদ গাজী চৌধুরীর সময়কালেই এ জমিদার পরিবারের বিস্ত্ততি ঘটে। সাধারণভাবে জমিদার বলতেই সাধারণ মানুষের মনে যে নেতিবাচক প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠে আহমেদ গাজী সে ধরনের জমিদার ছিলেন না। প্রজা হিতৈসী এ জমিদার তার কাজের মাধ্যমে নিজেকে একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। দয়া ও দানশীলতাই ছিলো তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি অনেক জমি ওয়াকফ করে যান্।
এখানে লাউতলীর দিঘি’র ওয়াকফ উল্লেখযোগ্য। শিক্ষানুরাগী এ জমিদার অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এর মধ্যে রূপসা আহম্মদিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং রূপসা আহম্মদিয়া মাদ্রাসা উল্লেখযোগ্য। তিনি ছিলেন খুবই ধর্মানুরাগী। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারকল্পে তিনি অকৃপণভাবে অনুদান প্রদান করতেন। রূপসার সুপ্রাচীন জামে মসজিদ তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়া আরো অনেকগুলো মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।
যখন মন ভাল নেই তখন ভ্রমনে বের হয়ে যান। ঘুরে আসতে পারেন মেঘনা, পদ্মা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনে গঠিত চাদঁপুর এর মিনি কক্সবাজার থেকে। বর্তমানে ভ্রমন পিপাসুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বিনোদনের জায়গা হয়ে উঠেছে ইলিশের রাজ্য চাঁদপুর জেলার পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে জেগে ওঠা বিশাল বালুচর যা পর্যটকদের কাছে মিনিকক্সবাজার (Mini Cox’s Bazar) হিসেবে পরিচিত। তবে স্থানীয়রা চরটিকে মোহনার চর বা চাঁদপুরের সৈকত হিসেবেও চিনে থাকে।
চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড বা তিন নদীর মোহনা থেকে মাত্র মিনিট দশেক দূরত্বে অবস্থিত এ চর। মনের বিনোদনের তৃপ্তি মিটানোর জন্য এটি সকল পর্যটকদের উপযুক্ত স্থান। বিকালে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করে পর্যটকরা।
অবস্থান
চাঁদপুর জেলা শহর থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে পশ্চিমে অবস্থিত এই মিনি কক্সবাজার যা ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে পদ্মার পাড় জুড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। যার পশ্চিমে পদ্মা ও পূর্বে মেঘনা নদী প্রবাহিত।
যাযাউপভোগকরবেন
যারা প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমনবিলাসি তাদের জন্য চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজার হয়ে উঠবে এক আদর্শ ভ্রমন। এখানকার প্রতিটি দেখা দৃশ্য আপনাকে করবে মুগ্ধ। নদীর নৌকা বা ট্রলার ঘণ্টায় ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন পুরো পদ্মা জুড়ে।
সারাদিন রোদের মধ্যে পানিতে ঝাপাঝাপির পর যখন আপনি তৃষ্ণার্ত, তখন বেঞ্চের পাশেই দেখতে পাবেন অসংখ্য ডাব বিক্রেতা ডাব বিক্রি করছে। অনেক কম খরচে সুমিষ্ট ডাবের পানি পাবেন আপনি এখানে। ইচ্ছে হলেই বালুচরে বন্ধুদের নিয়ে মেতে উঠতে পারেন ফুটবলসহ অন্যান্য খেলায়।
প্রতিদিন হাজারো পর্যটক এখানে এসে ভিড় জমায় পৃথিবীর বুকে সূর্যাস্ত দেখার জন্য। আরও দেখতে পাবেন নদীর বুক চিঁরে যাওয়া নানান গতির লঞ্চ, মালবোঝাই সাগরের জাহাজের ছুটে চলা এবং জেলেদের নৌকা বোঝাই করে ইলিশ ধরার দৃশ্য।
এছাড়া পর্যটকদের জন্য এখানে আছে একটি বাথরুম, খাবারের জন্য ছোট একটি খাবার দোকান ও নামাজের জন্য আছে একটি মসজিদের ব্যবস্থা।
পদ্মারপাড়ভ্রমন
আকারে বেশ বড় পদ্মার পাড়টির যে পাশে বেঞ্চ এবং ছাতা দেখতে পাবেন তার ঠিক পিছনেই রয়েছে ঝাউগাছ আর রোদের আলোয় আলোকিত চিকিমিকি বালি। নদীর স্রোত ও ছোট ছোট ঢেউ আছড়ে পড়ে বালুকাময় চরটিতে।
পুরো নদীর তীর ও তার আশেপাশের এলাকা সমুদ্র সৈকতের রূপে সজ্জিত। প্রকৃতির ছায়াঘন পরিবেশ ও কিছুক্ষণ পরপর বয়ে আসা হালকা বাতাস আপনার সকল ক্লান্তি মুছে দিয়ে নিমিষে আপনাকে প্রফুল্ল করে তুলবে।
ইঞ্জিনচালিতট্রলারওস্প্রিডবোটভাড়া
দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকদের পদ্মার পাড়ে আনা-নেওয়ার জন্য তিন নদীর মোহনায় আগত অতিথিদের জন্য সারিবাঁধা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, স্প্রিডবোট অথবা নৌকা নিয়ে অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকে চালকরা। তবে ছুটির দিন ও বিভিন্ন স্পেশাল দিনগুলোতে ট্রলার খালি পাওয়া মুশকিল।
পদ্মার পাড় যাওয়ার জন্য এখানে আপনি লোকাল ও রিজার্ভ দুই ধরনের ট্রলারই পাবেন। পুরো ট্রলার রিজার্ভ নিলে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ৪০০ টাকা। ট্রলার চালক অতিথিদের থেকে আসা এবং যাওয়া ভাড়া একসাথে নিয়ে নেয়। ট্রলারে রেগুলার ভাড়া অর্থাৎ লোকালে গেলে যাওয়া- আসা সহ জনপ্রতি ৫০ টাকা। তবে বিশেষ দিনে ভাড়া ১০০ টাকা করে নিবে।
সারাদিন ঘুরাঘুরি শেষে সেখান থেকেই আপনি ট্রলারে করে ফিরতে পারবেন। তখন কোনো ভাড়া নিবে না।
যাওয়ারসঠিকসময়
বিশেষ করে শীতকালে এবং গ্রীষ্মের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চরের সৌন্দর্য সকলের মন কাড়ে। বিশাল জলরাশির ছোট ছোট ঢেউ আর বালুকাময় বিস্তীর্ণ বালুচরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য যেকোনো ঋতুতে আসলে আপনি উপভোগ করতে পারবেন।
থাকারজায়গা
সারাদিন ভ্রমন শেষে চাঁদপুর শহরে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে পর্যটকদের জন্য বেশকিছু মোটামোটি মানের থাকার হোটেল আছে। যার ভাড়া নিবে প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
এইচএসসি পরীক্ষা শেষে মাথায় নতুন ভাবনা কোন বিষয় নিয়ে স্নাতক পড়ব! মা-বাবা, বন্ধু, বড় ভাই, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে একেকজনের একেক পরামর্শ। তবে নিজের ভালোলাগা বিষয়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হয় সময়ের চাহিদাকে। যেমন- সময় এখন পর্যটনের। সারা বিশ্বেই পর্যটনকেন্দ্রিক পড়াশোনার কদর বাড়ছে হু হু করে। বাংলাদেশে তো বটেই। সুতরাং আপনার পছন্দ যদি হয় পর্যটন ও আতিথেয়তা, তাহলে চোখ বন্ধ করে ভর্তি হতে পারেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে।
কোন বিষয়ে শিক্ষিত হয়ে সুন্দর ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন কার না থাকে। একটি পেশা বেছে নিতে প্রয়োজন সঠিক ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। একটি সঠিক সদ্ধিান্ত গড়ে দিতে পারে একটি সফল ক্যারিয়ার। বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক ও ঐতিহ্যের সম্পদের রানী বলা হয়ে থাকে। দেশে অনেক জায়গা রয়েছে সেগুলো কাজে লাগিয়ে পর্যটন সেক্টরকে আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে অনেক নামিদামি তারকা হোটেল এবং রিসোর্ট। বাড়ছে দক্ষ কর্মী ও ব্যবস্থাপকের চাহিদা। দেশের বাইরেও আছে লোভনীয় চাকরির হাতছানি। তাই এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হতে পারেন ব্যাচেলর ইন আর্টস ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্টে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত গ্রিন ক্যাম্পাস খ্যাত দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আইইউবিএটি এর উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুর রব বলেন, আইইউবিএটির সার্বিক লক্ষ্য হচ্ছে উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কাউন্সেলিং দ্বারা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা যাতে করে তারা পছন্দের পেশায় নিয়োজিত হতে পারে। আইইউবিএটি জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
পরশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস
আইইউবিএটির সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রয়েছে শিক্ষার্থী বিনিময় প্রকল্প শীর্ষক সমঝোতা চুক্তি। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছরই এ বিভাগের কোনো না কোনো শিক্ষার্থী বিদেশের কোনো না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়। পড়াশুনা শেষ করে তারা দেশে বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আইইউবিএটি হোটেল ম্যানেজমেন্ট থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশ-বিদেশের আন্তর্জাতিক মানের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, এয়ারলাইন্স, ট্যুর কোম্পানি ও ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত আছে। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কোঅর্ডিনেটর মোহাম্মদ আবু হুরাইরা বলেন, বিগত কয়েক বছরে আমাদের বাংলাদেশও পর্যটন শিল্পে অপার সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়েছে। টেকসই অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তিই হতে পারে আমাদের এই পর্যটন শিল্প খাত।
পরশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস
তিনি বলেন, পর্যটন শিল্প আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশবান্ধব টেকসই কর্মসংস্থান এবং জীবনের মান উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশের আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে পর্যটনে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
হোটেলওট্যুরিজমপেশারদায়িত্ব
এখনকার পাঁচতারা হোটেল মানেই যেন একটা ছোটখাটো শহর। গোটা ছয় রেস্তোরাঁ ২৪ ঘণ্টা খোলা, কফিশপ, কনফেকশনারি, সুইমিং পুল, ডিস্কো, কনফারেন্স রুম, বুটিক, টেনিস কোট কিছুই বাদ নেই। তাই এসব হোটেল চালাতে গেলে প্রয়োজন পেশাদার কর্মীর। কারণ একটি আধুনিক পাঁচতারা হোটেলে বেশকিছু বিভাগ থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, হাউস কিপিং, পাবলিক রিলেশন, মার্কেটিং, ফিনানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট, হোটেলের ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজমেন্টসহ সব জায়গায় হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাস করা ছাত্র-ছাত্রীদের কদর।
পরশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস
যেসববিষয়েরচাহিদাবেশি
হোটেল ম্যানেজমেন্ট শুধু একটি বিষয় নয়। এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন_ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন, ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম, হাউসকিপিং, বেকারি অ্যান্ড পেস্ট্রি প্রোডাকশন, ফ্রন্ট অফিস সেক্রেটারিয়াল অপারেশন ইত্যাদি। এসব বিষয়ে ছয় মাসের শর্ট কোর্স এবং এক বছর, দুই বছর কিংবা তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে। আর স্নাতক কোর্স তো আছেই। চাহিদামতো যেকোনো একটি কোর্স করতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদি কোর্সগুলো চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি গ্রহণযোগ্য। চাকরির ক্ষেত্রে চাহিদা বেশি এমন ছয়টি বিষয়ের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো_
ফুডঅ্যান্ডবেভারেজসার্ভিস
: খাবার তৈরি, টেবিল সাজানো, খাদ্য ও পানীয় পরিবেশন, পানীয় ও খাদ্যতালিকা হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন ইত্যাদি বিষয় কোর্সের অন্তর্ভুক্ত।
ফুডঅ্যান্ডবেভারেজপ্রোডাকশন
: এই কোর্সের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো বাংলাদেশি, চায়নিজ, ইউরোপিয়ান, ইন্ডিয়ান খাবার তৈরি প্রণালী, ডেকোরেশন, হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন।
ফ্রন্টঅফিসসেক্রেটারিয়ালঅপারেশন
: অভ্যর্থনা টেলিফোন ম্যানার্স, চেক ইন, চেক আউট, বিল সংরক্ষণ, হিসাব সংরক্ষণ, রেকর্ড সংরক্ষণ ও কম্পিউটারসংক্রান্ত বিষয়গুলো শিখবেন এ কোর্সে।
সার্টিফিকেটকোর্সইনহাউসকিপিংঅ্যান্ডলন্ড্রি
: কক্ষসজ্জা, বেড তৈরি, ক্লিনিং, লন্ড্রি সার্ভিস, হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন, ফাস্ট এইড ইত্যাদি এ কোর্সের অন্তর্ভুক্ত।
বেকারিঅ্যান্ডপেস্ট্রিপ্রোডাকশন
: এই কোর্সে শিখবেন কেক, পেস্ট্রি, ব্রেড, কুকিজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ডেজার্ট আইটেম প্রস্তুত, ডেকোরেশন, হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশনের মতো বিষয়গুলো।
পরশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস
ট্রাভেলএজেন্সিঅ্যান্ডট্যুরঅপারেশন
: এয়ারলাইন্স, ট্রাভেল এজেন্সি ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য এখানে শিখবেন ট্যুর অপারেশন্স অ্যান্ড ট্যুর গাইডিং, ট্রাভেল সার্ভিস, ট্রাভেল ও কালচারাল জিওগ্রাফি বিষয়গুলো।
ভর্তিরযোগ্যতা
এ বিষয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে আপনাকে প্রথমে এইচএসসি পাস করতে হবে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে গ ইউনিটের অধীনে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। কারণ এখানে এটি ব্যবসা অনুষদের বিষয় হিসেবে পড়ানো হয়। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য এইচএসসিতে যে কোনো বিভাগ থাকলে চলবে।
পরশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস
বিদেশেপড়াশোনাওক্যারিয়ারসম্ভাবনা
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, পোল্যান্ড, সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশে ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজমে পড়াশোনাসহ গ্র্যাজুয়েশন করার সুযোগ রয়েছে। পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভর করে এসব দেশে গড়ে উঠেছে প্রচুর হোটেল রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, ট্যুর কোম্পানি ও ট্রাভেল এজেন্সি। এসব দেশে এখনও দক্ষ পেশাজীবীর প্রচুর চাহিদা। এখনও পড়াশোনা এবং প্রশিক্ষণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল শিক্ষার পাশাপাশি ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজমে কাজ করার অফুরন্ত সুযোগ। তাই এসব দেশে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী যাচ্ছে। আপনিও চাইলে প্রয়োজনীও শর্ত পূরণ করে যেতে পারেন এসব দেশে। আমাদের স্বপ্নের এ বাংলাদেশে ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্টে ক্যারিয়ার দিন দিন বাড়ছে। আমাদের এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে আপনিও পারেন অবদান রাখতে।
কোথায়পড়বেনহসপিটালিটিএন্ডহোটেলম্যানেজম্যান্ট:
বাংলাদেশে একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান হল মহাখালীতে ন্যাশন্যাল হোটেল ম্যানেজম্যান্ট এন্ড টুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিউট। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে বনানীতে আছে রয়েল ইউনির্ভাসিটি অব ঢাকা, উত্তরাতে আছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, এছাড়া রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েতে। আকার ভেদে এক এক জায়গায় পড়াশুনার খরচ এক এক রকম। সেরকারী প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার খরচ প্রায় ৮০০০০-১০০০০০ টাকা পর্যন্ত হয়। আর বেসরকারীতে পড়াশুনার খরচ পড়ে ৪০০০০০-৬০০০০০ টাকা পর্যন্ত।
We use cookies to optimize our website and our service.
Functional
Always active
The technical storage or access is strictly necessary for the legitimate purpose of enabling the use of a specific service explicitly requested by the subscriber or user, or for the sole purpose of carrying out the transmission of a communication over an electronic communications network.
Preferences
The technical storage or access is necessary for the legitimate purpose of storing preferences that are not requested by the subscriber or user.
Statistics
The technical storage or access that is used exclusively for statistical purposes.The technical storage or access that is used exclusively for anonymous statistical purposes. Without a subpoena, voluntary compliance on the part of your Internet Service Provider, or additional records from a third party, information stored or retrieved for this purpose alone cannot usually be used to identify you.
Marketing
The technical storage or access is required to create user profiles to send advertising, or to track the user on a website or across several websites for similar marketing purposes.