সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য হাতছানি দেয় পর্যটকদের

কথা হয় শরীয়তপুর থেকে সুন্দরবনে আসা কবির মোল্যার সঙ্গে। তিনি বলেন, ১২ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে বাসে করে ৩৮ জনের একটি দল সুন্দরবন ভ্রমণে মোংলার উদ্দেশে রওনা দেন। পরদিন ভোর পাঁচটার দিকে পৌঁছান মোংলার পিকনিক কর্নারে। তারপর সেখান থেকে ট্রলারে করে সুন্দরবনে যান। এটা তাঁদের প্রথম সুন্দরবন ভ্রমণ। এখানে ঘুরে তাঁরা সবাই আনন্দিত। তাঁরা সুন্দরবনের করমজল এবং হাড়বাড়িয়া পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ঘুরে এসেছেন। এখানকার গাছগুলো এতটাই দুষ্প্রাপ্য যে সেগুলো সুন্দরবন ছাড়া অন্য কোথাও দেখেননি।

রাকিবুল ইসলাম ঢাকা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দরবনে ঘুরতে এসেছি‌লেন। তি‌নি প্রথম আলোকে বলেন, এখানে ভ্রমণের আগপর্যন্ত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সম্পর্কে মাল্টিমিডিয়া, বইপুস্তক ও পত্রপত্রিকা থেকে জেনেছিলেন। নিজের চোখে সব দেখে তিনি খুবই খুশি।

মোংলা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার একমাত্র সহজলভ্য মাধ্যম জালি বোট (ইঞ্চিনচালিত একধরনের ছোট ট্রলার), ক্ষেত্রবিশেষে লঞ্চ। কিন্তু সেগুলোয় পর্যটকদের ওঠানোর জন্য নির্দিষ্ট কোনো ঘাটের ব্যবস্থা নেই। ফলে এখানে আগত পর্যটকদের জালি বোটে তুলতে বিপাকে পড়তে হয় মাঝিদের।

এইচ এম দুলাল, সভাপতি, মোংলা বন্দর জালি বোট মালিক সমবায় সমিতি

মোংলা পিকনিক কর্নারের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ওমর ফারুক পসরা সাজিয়ে বসেছেন পর্যটকদের জন্য। তিনি বলেন, ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তাঁদের ব্যবসা মোটামুটি ভালোই চলে। নানা রকম মুখরোচক খাবার, মধু ও খেলনা বেশি বিক্রি হয় এই সময়। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে তখন।

ট্রলারের চালক মো. সোহেল ও মো. জাকির বলেন, ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তাঁদের যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে ভালোভাবেই পরিবার চালানো যায়। বাকি সময়গুলো তাঁদের দিনমজুরি করতে হয়।

দর্শনার্থীদের কেউ কেউ বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার বা স্থানে স্থানে গোলচত্বর থাকলে ভালো হতো। সুপেয় পানির সংকটের কারণে বেশি দাম দিয়ে বোতলজাত পানি কিনে পান করতে হয়। বোতল এখানে–সেখানে ফেলার কারণে পরিবেশদূষণও হয়। পরিচ্ছন্ন ও মানসম্পন্ন শৌচাগারের খুবই অভাব এখানে।ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তাঁদের ব্যবসা মোটামুটি ভালোই চলে। নানা রকম মুখরোচক খাবার, মধু ও খেলনা বেশি বিক্রি হয় এই সময়। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে তখন।

ওমর ফারুক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

পর্যটকদের আরও কিছু সমস্যা প্রসঙ্গে মোংলা বন্দর জালি বোট মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি এইচ এম দুলাল বলেন, মোংলা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার একমাত্র সহজলভ্য মাধ্যম জালি বোট (ইঞ্চিনচালিত একধরনের ছোট ট্রলার), ক্ষেত্রবিশেষে লঞ্চ। কিন্তু সেগুলোয় পর্যটকদের ওঠানোর জন্য নির্দিষ্ট কোনো ঘাটের ব্যবস্থা নেই। ফলে এখানে আগত পর্যটকদের জালি বোটে তুলতে বিপাকে পড়তে হয় মাঝিদের। পর্যটকেরা এসব অসুবিধার কারণে দ্বিতীয়বার এখানে আসতে চান না।

পর্যটকদের ভোগান্তির বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মো. শাহীনুর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যা সমাধানে নানা রকম পরিকল্পনা নিয়েছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.