উঁচু উঁচু পাহাড় যেন বাংলাদেশ-ভারতের সীমানাকে মজবুত এক ভিত্তির ওপর দাঁড় করে রেখেছে। পাহাড়ের পাদদেশ পুরোটা বাংলাদেশের জাফলং। পাহাড় থেকে ঝরনাধারার পানি জাফলংয়ের পিয়াইন নদে মিশেছে। পাহাড়-পাথর-জলের মেলবন্ধন ও পানির ছলাৎ ছলাৎ শব্দে অন্য রকম এক প্রাকৃতিক রূপের জাফলংকে ঘিরে সিলেটের পর্যটন ব্র্যান্ডিং। নাম ‘প্রকৃতিকন্যা’।
বর্ষকালীন প্রকৃতিকন্যার রূপ দেখতে বড় কোনো ছুটিতে দেখা যেত হাজার হাজার পর্যটক। ঈদের ছুটিতে এক জাফলংয়েই পর্যটকদের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় পর্যটনকেন্দ্রে যাতায়াত নিষিদ্ধ। এ কারণে এবারের ঈদে বাইরের কোনো পর্যটক নেই। গতকাল শনিবার ঈদের দিন বিকেলেও এই এলাকা ছিল ফাঁকা। ঈদের পরদিন রোববার বিকেলে জাফলংয়ের শূন্যরেখার (জিরো পয়েন্ট) কাছের এলাকা আর সিলেট শহরের কিছু তরুণের ভিড় দেখা গেল। ‘এবার প্রকৃতিকন্যার কোলে শুধু আমরাই’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন সিলেট নগরীর পাঠানটুলার বাসিন্দা আতিকুর রহমান।
জাফলংয়ের শূন্যরেখার কাছে সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলে জমেছে সাদা পাথর আর নুড়িপাথর। সেই স্থানটুকু বাদে চারদিক জলমগ্ন। একপাশে জল, আরেক পাশে পানি আর সীমান্তজুড়ে মেঘ-পাহাড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে শুধু স্থানীয় লোকজনকে। রোববার বিকেলে সিলেট শহর থেকে পর্যটকেরা বিচ্ছিন্নভাবে সেখানে গেলে কিছুটা ভিড় দেখা যায়। বিকেলে জাফলং ছাড়াও কিছু মানুষ দেখা গেছে কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর এলাকায়ও।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও সুমন আচার্য জানিয়েছেন, ‘পাহাড়ি ঢলে নতুন করে জমা হওয়া পাথর সংরক্ষণ আর করোনা পরিস্থিতিতে আমরাও সেখানে পর্যটক যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি রেখেছি। এ জন্য স্থানীয় লোকজন ছাড়া বাইরের মানুষজনের যাতায়াত নেই।’
উঁচু উঁচু পাহাড় যেন বাংলাদেশ-ভারতের সীমানাকে মজবুত এক ভিত্তির ওপর দাঁড় করে রেখেছে। পাহাড়ের পাদদেশ পুরোটা বাংলাদেশের জাফলং। পাহাড় থেকে ঝরনাধারার পানি জাফলংয়ের পিয়াইন নদে মিশেছে। পাহাড়-পাথর-জলের মেলবন্ধন ও পানির ছলাৎ ছলাৎ শব্দে অন্য রকম এক প্রাকৃতিক রূপের জাফলংকে ঘিরে সিলেটের পর্যটন ব্র্যান্ডিং। নাম ‘প্রকৃতিকন্যা’।
বর্ষকালীন প্রকৃতিকন্যার রূপ দেখতে বড় কোনো ছুটিতে দেখা যেত হাজার হাজার পর্যটক। ঈদের ছুটিতে এক জাফলংয়েই পর্যটকদের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় পর্যটনকেন্দ্রে যাতায়াত নিষিদ্ধ। এ কারণে এবারের ঈদে বাইরের কোনো পর্যটক নেই। গতকাল শনিবার ঈদের দিন বিকেলেও এই এলাকা ছিল ফাঁকা। ঈদের পরদিন রোববার বিকেলে জাফলংয়ের শূন্যরেখার (জিরো পয়েন্ট) কাছের এলাকা আর সিলেট শহরের কিছু তরুণের ভিড় দেখা গেল। ‘এবার প্রকৃতিকন্যার কোলে শুধু আমরাই’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন সিলেট নগরীর পাঠানটুলার বাসিন্দা আতিকুর রহমান।
জাফলংয়ের শূন্যরেখার কাছে সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলে জমেছে সাদা পাথর আর নুড়িপাথর। সেই স্থানটুকু বাদে চারদিক জলমগ্ন। একপাশে জল, আরেক পাশে পানি আর সীমান্তজুড়ে মেঘ-পাহাড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে শুধু স্থানীয় লোকজনকে। রোববার বিকেলে সিলেট শহর থেকে পর্যটকেরা বিচ্ছিন্নভাবে সেখানে গেলে কিছুটা ভিড় দেখা যায়। বিকেলে জাফলং ছাড়াও কিছু মানুষ দেখা গেছে কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর এলাকায়ও।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও সুমন আচার্য জানিয়েছেন, ‘পাহাড়ি ঢলে নতুন করে জমা হওয়া পাথর সংরক্ষণ আর করোনা পরিস্থিতিতে আমরাও সেখানে পর্যটক যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি রেখেছি। এ জন্য স্থানীয় লোকজন ছাড়া বাইরের মানুষজনের যাতায়াত নেই।’
ঈদের ছুটিতে জাফলং, সাদা পাথর এলাকা ছাড়াও সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার মায়াবী ঝরনা, শ্রীপুর চা-বাগান, বিছনাকান্দি, জলাবন রাতারগুল, জৈন্তাপুরের শাপলা বিলসহ চা-বাগান এলাকায় হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় থাকত। এ কারণে সিলেট শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্টহাউস ও রেস্তোরাঁগুলো ব্যস্ত সময় পার করত। গত ঈদুল ফিতরের পর এবার ঈদুল আজহায়ও ফাঁকা সবকিছু। বাইরের পর্যটকদের যাতায়াত না থাকায় সিলেট শহরসহ পর্যটনকেন্দ্রের আশপাশের এলাকার স্থানীয় লোকজনকে বেড়াতে দেখা গেছে। তবে খাবারের রেস্তোরাঁ সবই বন্ধ আছে।
এই সময়টাতে শহরের বাইরে প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র ছাড়াও ফেঞ্চুগঞ্জে হাকালুকির ‘জিরো পয়েন্ট’ এলাকায় বর্ষায় হাওর দেখতেও পর্যটকদের ভিড় থাকত। পাহাড়-পাথর-জল ছাপিয়ে ভিন্ন এক প্রকৃতির দেখা মেলে এখানে। এই মেঘ, এই রোদ প্রকৃতির সঙ্গে চলে একসঙ্গে রোদ-বৃষ্টির খেলাও। করোনাকালে মেঘের কোলে রোদের বিকেলেও হাকালুকি হাওরপার জনমানবহীন, ফাঁকা।
ফেঞ্চুগঞ্জের ঘিলাছড়া দিয়ে যেতে হয় হাকালুকির ‘জিরো পয়েন্টে’। সেখান থেকে হাতে বাওয়া নৌকা আর ইঞ্জিনচালিত ‘বুট’ ও পর্যটকবাহী ছোট ‘লঞ্চ’ ভাড়ায় মেলে। বর্ষাকালকে হাওরের যৌবন বলা হয়। দিগন্ত বিস্তৃত যে হাওর শুষ্ক মৌসুমে সবুজময়, সেই একই হাওর বর্ষায় অথই জলে সাগরের মতো এক রূপ। হাওরের ঢেউয়ের নাম ‘আফাল’। দূর হাওর থেকে ‘আফাল’ও আছড়ে পড়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায়।
সিলেট অঞ্চলে হাকালুকি আর সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর পর্যটকদের নিকট বেশ পরিচিত। হাওর-প্রকৃতি দেখতে বর্ষাকালেই বেশি ভিড় হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে এবারের বর্ষায় ফাঁকা হাওর এলাকাও ঈদের সময় ভিড় নেই।
ঈদের আগে হাকালুকির জিরো পয়েন্টে গিয়ে জনা পাঁচেক মানুষ দেখা গেছে। তাঁদের মধ্যে ফারুক হোসেন ও আলতাফুর রহমান নামের দুই বন্ধু সন্ধ্যার সময় বৃষ্টির মধ্যে ‘সেলফি’ তুলছিলেন। ঘিলাছড়ার বাসিন্দা ওই দুই তরুণও জানালেন, মেঘ আর রোদের খেলা দেখে দেখে তাঁরা হাওর পাড়ে এসেছেন। মানুষ নেই বলে মন খারাপ তাঁদেরও। ফারুক বলেন, ‘ই (এই) সময় মানুষের ভিড়ে পা রাখা গেছে না ইখানও (এখানে)। ইবারকু (এবার) ফাঁকা হাওর দেখছি শুধু আমরাই।’
সিলেটের পর্যটনবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সিলেট ট্যুরিজম ক্লাব ও ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘করোনাকালের শুরুতে সবকিছু বন্ধ থাকলেও এখন সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হচ্ছে। অনেক দিন বন্ধ থাকায় সম্ভাবনাময় এই শিল্পে এখন দুঃসময় ভর করছে। কর্ম না থাকায় সিলেটের পর্যটনশিল্পে জড়িত প্রায় ১০ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেকার হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে হলেও সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার দাবি তাঁর।
তবে এই নিয়ে দ্বিমত আছে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের। সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী বলেন, সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো না খুললে পর্যটকেরা আসবেন না, এটা সত্যি। করোনা সংক্রমণ এখনো বেড়েই চলছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলো খোলা হলে বড় কোনো বিপদ আসে কি না, এই নিয়েও দুশ্চিন্তা আছে। এ নিয়ে বড় রকমের দোলাচল আসলে কাটছেই না।
সিলেট অঞ্চলে প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র বেশি গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুস সাকিব জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনসমাগম এড়াতে গত ৩০ মার্চ জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ওই নির্দেশনার কারণে ঈদুল ফিতরে পুরোপুরি পর্যটকশূন্য ছিল জাফলং। এবারের ঈদে পরিস্থিতির কিছু পরিবর্তন হওয়ায় আমরা পর্যটনকেন্দ্রে যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না করে নিরুৎসাহিত করছি। এই শিথিল অবস্থায় কিছু মানুষের ভিড় হচ্ছে। তবে বাইরের মানুষজন এখনো শূন্য। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমা পর্যন্ত এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।