ভ্রমন করুন রাতারগুল থেকে

পরশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস

আপনার ক্লান্তিময় , ব্যস্তময় নাগরিক জীবন থেকে কিছুটা দূরে থাকতে ভ্রমন করতে পারেন সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট থেকে । নাগরিক জীবনের কর্মব্যস্ততায় কখনো কখনো জীবন একদমই একঘেয়েমী হয়ে যায়। শরীর ও মন দুটোই যেন অলস ও নিথর হয়ে পড়ে। দুটোকেই সুস্থ রাখার জন্য চাই বিনোদন। তাই অনাড়ম্বর কর্মজীবনের ব্যস্ত সময়কে পেছনে ফেলে দুই রাত একদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এলাকা সিলেটের রাতারগুল জলাবন বা রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট থেকে। রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন যা ‘সিলেটের সুন্দরবন’ নামে খ্যাত। এই অরণ্য বছরে ৪-৫ মাস পানির নিচে থাকে। তবে জলে কোমর ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমায় বেশি বর্ষার মৌসুমে। তখন অবশ্য ডিঙ্গি নৌকায় করে ঘুরতে হয়। ডিঙিতে চড়ে বনের ভিতর ঘুরতে ঘুরতে দেখা যাবে প্রকৃতির রূপসুধা। জলমগ্ন বলে এই বনে সাপের আবাসটাই বেশি, তবে ভাগ্য ভালো হলে দেখা হয়ে যেতে পারে দু-একটা বানরের সাথে। তাছাড়া চোখে পরার মত বনে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিলসহ নানা জাতের পাখিতো আছেই।

রশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস

♦ অবস্থান: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে, গুয়াইন নদীর দক্ষিণে এই বনের অবস্থান। সিলেট শহর থেকে এর দূরত প্রায় ২৬ কিলোমিটার। যেতে লাগবে-  গাড়ি > ইঞ্জিন নৌকা > ডিঙ্গি নৌকা।

♦ যেভাবে যাবেন: রাতারগুল যেতে পারেন দু-দিক দিয়ে। এয়ারপোর্টের পেছন থেকে একটা বাইপাস রোড ফতেহপুর হয়ে হরিপুরে গিয়ে মিশেছে। এদিকেও যেতে পারেন। অথবা জাফলং রোডেও যেতে পারেন। তবে যেতে হবে সিলেট থেকেই।

যাইহোক, মানুষ ৬-৮ জন হলে প্রথমেই সিলেট শহরে ‘চৌহাট্টা থেকে একটা মাইক্রোবাস ঠিক করে নিন। আসা-যাওয়ার বাবদ খরচ পরবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মত। মাইক্রোবাসে করে প্রায় ঘণ্টাখানেক যাওয়ার পর পৌছে যাবেন গোয়াইন নদীর তীরে।

রশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস

এখানে নেমেই ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিন, যাতে পরে এসে খুঁজে পেতে সমস্যা না হয়। তারপর চলে যান সোজা নদীর ঘাট। সেখান থেকে যেতে হবে প্রায় আধঘণ্টা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে। খরচ পরবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মত।

মনে রাখবেন এই নৌকা কিন্তু বনের ভেতর ঢুকবে না। বনে ঢুকতে হবে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে। এই নৌকা আপনাকে বনের পাশে নামিয়ে দেবে। বনে নামার পর কিছুদূর গেলেই চোখে পড়বে ডিঙ্গি নৌকা। কথাবার্তা বলে একটা ঠিক করে নিন। ডিঙ্গি নৌকার ভাড়া পরবে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মত।

♦ সিলেটের আম্বরখানা মোড় থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করেও যেতে পারেন মোটরঘাট। যেতে সময় লাগবে প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। সেখান থেকে নৌকা রিজার্ভ করেও রাতারগুল যেতে পারবেন।

♦ সর্তকতা: বর্ষায় বনে জোঁক আর সাপের প্রকোপ বেশি থাকে। তাই সাবধান থাকবেন। যাঁরা সাঁতার জানেন না, সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন। তাছাড়া বনে ঢুকে পানিতে হাত না দেয়াই ভালো। কারণ বিষাক্ত সব সাঁপ এখানে ঘুরে বেড়ায়! নৌকায় বসে কোন গাছের ডালে হাত দিতেও সতর্ক থাকুন।

রশমনি টুরস এন্ড ট্রাভেলস

♦ সিলেটের বাইরে থেকে যারা আসবেন তাদের জন্য আরেকটা সতর্কবাণী- রাতারগুল থাকা-খাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই। যাওয়ার সময় হালকা পাতলা কিছু খাবার (চিপস, বিস্কিট, পানি ইত্যাদি) সাথে করে নিয়ে যেতে পারেন। আর থাকার জন্য ফিরে আসতে হবে সিলেটেই।

♦ পরামর্শ: রোদের জন্য ছাতা নিতে পারেন। তবে দুপুর টাইমে না যাওয়াই ভালো। খুব সকালে গেলে অনেক পাখি দেখতে পারবেন। তাদের কিচিরমিচিরে পরিবেশটা হবে অন্যরকম। আবহাওয়াটাও ঠাণ্ডা থাকবে। তাছাড়া শেষ বিকেলের দিকেও যেতে পারেন। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হবে তখন গাঁ ছমছমে ভাব আসবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.