আপনার পোষা প্রাণীকে আপনি যেভাবে ভালোবাসেন এবং যত্ন নেন অন্য কেউ সেভাবে নিতে পারবে না। ভ্রমণের সময় এলেই আমরা এই পেট বা পোষা প্রাণী নিয়ে কম-বেশি উদ্বিগ্ন হই। অনেক সময় দেখা যায় পেটদের নিরাপত্তার জন্যই আমরা ভ্রমণ ক্যান্সেল করে থাকি।
এছাড়াও পোষা প্রাণী নিয়ে ভ্রমণে আমাদের মাঝে মাঝে বেশ কিছু জটিলতারও সম্মুখীন হতে হয়। তাই বলে কী ভ্রমণ ত্যাগ করা উচিত আমাদের? একদমই না। কিছু বিষয় মেনে চললে আমরা আমাদের পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে বেশ সুন্দর এবং উপভোগ্য এক ভ্রমণ সম্পন্ন করতে পাড়ি। চলুন সে বিষয়সমূহ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
পোষা প্রাণী নেয়ার অনুমতি
বিভিন্ন জায়গায় পোষা-প্রাণী সাথে নেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। এছাড়াও সাথে নিয়ে গেলে বেশ কিছু ক্রাইটেরিয়া সম্পন্ন করতে হয়। সুতরাং সেসব ব্যাপার সম্পর্কে আগে থেকেই জানুন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।
যোগাযোগের পরিপূর্ণ তথ্য দেয়া
বিভিন্ন ভাবে আপনার পোষা প্রানীটি হারিয়ে যেতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনার মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা, ভ্যাকসিনের তথ্য ইত্যাদি প্রাণীটির গলার চেইনে ভালোভাবে যুক্ত করুন। হারিয়ে গেলে ফিরে পেতে এটিই সবচেয়ে ভালো উপায়।
ঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া
যথাযথ প্রশিক্ষণ দিন আপনার পোষা প্রানীটিকে। রাস্তায় যেকোনো ধরনের অবস্থায় যেন সে আপনার কথা মেনে চলে। বাস-প্লেন-ট্রেন বা হোটেলে যে কোন জায়গায়ই অনুগত প্রাণী ভ্রমণে বেশ শান্তি দিয়ে থাকে।
পোষাপ্রাণীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা
আপনার পোষা প্রাণীটির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত খুঁটিনাটি জেনে নিন। প্রয়োজনে ভেটের নিকট হতে চেকলিস্ট তৈরি করে নিন। ভ্রমনে নির্দিষ্ট সময় পর নিজে থেকে টেম্পারেচার, পালস ইত্যাদি পরিমাপ করুন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।
পোষাপ্রানীটির জন্য বাক্স কিনুন
আপনার পোষা প্রানীর সাইজ অনুযায়ী বাক্স কিনুন। ভ্রমণের সময় এগুলো বেশ সাহায্য করবে আপনাকে। এছাড়াও বাস-ট্রেন-বিমান ইত্যাদি যে মাধ্যমেই ভ্রমণ করেন না কেন পোষা প্রানীকে বাক্সে রেখে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারবেন। পোষা প্রানীর জন্য বেশ সুন্দর বাক্স পাবেন বাজারে।
পেট থার্মোমিটার, টুইজার, গজ, এন্টিবায়োটিক ওয়েন্টমেন্ট সহ অন্যান্য যাবতীয় ফার্স্ট এইড সামগ্রী আপনার পাশাপাশি পোষা প্রানীর জন্যও আলাদাভাবে নিন। প্রয়োজনের ভেটের পরামর্শ নিয়ে যাবতীয় সামগ্রী সংগ্রহ করুন। এগুলো যেকোনো সময়েই কাজে লাগতে পারে।
বাস-ট্রেন-বিমান ভ্রমনে করনীয়
যে মাধ্যমেই ভ্রমণ করেন না কেন অবশ্যই সাথের প্রাণীটিকে বাক্সে রাখুন। গাড়িতে ভ্রমণের সময় ক্যারিয়ারটিকে বেল্ট সহকারে বেধে সীটে বসিয়ে রাখুন। প্যাসেঞ্জার সিটে ক্যারিয়ারটিকে স্থাপন করুন। এছাড়াও তারা যেন জানালা দিয়ে মাথা বের না করতে পারে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
ট্রেনে কিংবা বিমানে ভ্রমণের সময় কর্তৃপক্ষের যথাযথ নির্দেশাবলী মেনে চলুন। এসব ক্ষেত্রে আগে থেকেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখুন। এছাড়াও এসব যাতায়াত মাধ্যমে কেবিন বুক করার চেষ্টা করুন।
পোষা প্রাণীবান্ধব হোটেলে অবস্থান
যেসব হোটেল পেট ফ্রেন্ডলি সেসব হোটেলে অবস্থানের চেষ্টা করুন। অনেক হোটেলই পোষা-প্রাণীসহ ভ্রমণকে স্বাগত জানায়। হোটেলে অবস্থানে চেষ্টা করুন নীচের ফ্লোরে রুম নেয়ার। এতে সহজেই বাইরে থেকে ঘুরে রুমে প্রবেশ করতে পারবেন। যদি পেট ফ্রেন্ডলি হোটেল খুঁজে না পান, তবে এয়ারবিএনবি বা অন্য মাধ্যমে ফ্লাট খুঁজে পেতে পারেন। টুরিস্ট স্পটে অনেকেই পোষা-প্রাণীসহ ফ্লাট ভাড়া দিয়ে থাকে।
সাধারণত পোষা-প্রাণীসহ ভ্রমনে একটু বেশী খরচ হলেও এটি বেশ উপভোগ্য। ভ্রমনে আপনি তাদের সঙ্গ বেশ সুন্দরভাবে উপভোগ করবেন। তাই উপরের টিপসগুলো মেনে পোষা-প্রাণী আপনার পরবর্তী ভ্রমনে ভ্রমণসঙ্গী যেন হতেই পারে।