যখন মন ভাল নেই তখন ভ্রমনে বের হয়ে যান। ঘুরে আসতে পারেন মেঘনা, পদ্মা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনে গঠিত চাদঁপুর এর মিনি কক্সবাজার থেকে। বর্তমানে ভ্রমনপিপাসুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বিনোদনের জায়গা হয়ে উঠেছে ইলিশের রাজ্য চাঁদপুর জেলার পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে জেগে ওঠা বিশাল বালুচর যা পর্যটকদের কাছে মিনি কক্সবাজার (Mini Cox’s Bazar) হিসেবে পরিচিত। তবে স্থানীয়রা চরটিকে মোহনার চর বা চাঁদপুরের সৈকত হিসেবেও চিনে থাকে।
চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড বা তিন নদীর মোহনা থেকে মাত্র মিনিট দশেক দূরত্বে অবস্থিত এ চর। মনের বিনোদনের তৃপ্তি মিটানোর জন্য এটি সকল পর্যটকদের উপযুক্ত স্থান। বিকালে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করে পর্যটকরা।
অবস্থান
চাঁদপুর জেলা শহর থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে পশ্চিমে অবস্থিত এই মিনি কক্সবাজার যা ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে পদ্মার পাড় জুড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। যার পশ্চিমে পদ্মা ও পূর্বে মেঘনা নদী প্রবাহিত।
যা যা উপভোগ করবেন
যারা প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমনবিলাসি তাদের জন্য চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজার হয়ে উঠবে এক আদর্শ ভ্রমন। এখানকার প্রতিটি দেখা দৃশ্য আপনাকে করবে মুগ্ধ। নদীর নৌকা বা ট্রলার ঘণ্টায় ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন পুরো পদ্মা জুড়ে।
সারাদিন রোদের মধ্যে পানিতে ঝাপাঝাপির পর যখন আপনি তৃষ্ণার্ত, তখন বেঞ্চের পাশেই দেখতে পাবেন অসংখ্য ডাব বিক্রেতা ডাব বিক্রি করছে। অনেক কম খরচে সুমিষ্ট ডাবের পানি পাবেন আপনি এখানে। ইচ্ছে হলেই বালুচরে বন্ধুদের নিয়ে মেতে উঠতে পারেন ফুটবলসহ অন্যান্য খেলায়।
প্রতিদিন হাজারো পর্যটক এখানে এসে ভিড় জমায় পৃথিবীর বুকে সূর্যাস্ত দেখার জন্য। আরও দেখতে পাবেন নদীর বুক চিঁরে যাওয়া নানান গতির লঞ্চ, মালবোঝাই সাগরের জাহাজের ছুটে চলা এবং জেলেদের নৌকা বোঝাই করে ইলিশ ধরার দৃশ্য।
এছাড়া পর্যটকদের জন্য এখানে আছে একটি বাথরুম, খাবারের জন্য ছোট একটি খাবার দোকান ও নামাজের জন্য আছে একটি মসজিদের ব্যবস্থা।
পদ্মার পাড় ভ্রমন
আকারে বেশ বড় পদ্মার পাড়টির যে পাশে বেঞ্চ এবং ছাতা দেখতে পাবেন তার ঠিক পিছনেই রয়েছে ঝাউগাছ আর রোদের আলোয় আলোকিত চিকিমিকি বালি। নদীর স্রোত ও ছোট ছোট ঢেউ আছড়ে পড়ে বালুকাময় চরটিতে।
পুরো নদীর তীর ও তার আশেপাশের এলাকা সমুদ্র সৈকতের রূপে সজ্জিত। প্রকৃতির ছায়াঘন পরিবেশ ও কিছুক্ষণ পরপর বয়ে আসা হালকা বাতাস আপনার সকল ক্লান্তি মুছে দিয়ে নিমিষে আপনাকে প্রফুল্ল করে তুলবে।
ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও স্প্রিডবোট ভাড়া
দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকদের পদ্মার পাড়ে আনা-নেওয়ার জন্য তিন নদীর মোহনায় আগত অতিথিদের জন্য সারিবাঁধা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, স্প্রিডবোট অথবা নৌকা নিয়ে অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকে চালকরা। তবে ছুটির দিন ও বিভিন্ন স্পেশাল দিনগুলোতে ট্রলার খালি পাওয়া মুশকিল।
পদ্মার পাড় যাওয়ার জন্য এখানে আপনি লোকাল ও রিজার্ভ দুই ধরনের ট্রলারই পাবেন। পুরো ট্রলার রিজার্ভ নিলে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ৪০০ টাকা। ট্রলার চালক অতিথিদের থেকে আসা এবং যাওয়া ভাড়া একসাথে নিয়ে নেয়। ট্রলারে রেগুলার ভাড়া অর্থাৎ লোকালে গেলে যাওয়া- আসা সহ জনপ্রতি ৫০ টাকা। তবে বিশেষ দিনে ভাড়া ১০০ টাকা করে নিবে।
- সারাদিন ঘুরাঘুরি শেষে সেখান থেকেই আপনি ট্রলারে করে ফিরতে পারবেন। তখন কোনো ভাড়া নিবে না।
যাওয়ার সঠিক সময়
বিশেষ করে শীতকালে এবং গ্রীষ্মের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চরের সৌন্দর্য সকলের মন কাড়ে। বিশাল জলরাশির ছোট ছোট ঢেউ আর বালুকাময় বিস্তীর্ণ বালুচরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য যেকোনো ঋতুতে আসলে আপনি উপভোগ করতে পারবেন।
থাকার জায়গা
সারাদিন ভ্রমন শেষে চাঁদপুর শহরে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে পর্যটকদের জন্য বেশকিছু মোটামোটি মানের থাকার হোটেল আছে। যার ভাড়া নিবে প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।