করোনায় ১৪ লাখ প্রবাসী হারিয়েছেন কাজ

করোনা মহামারিতে দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ প্রবাসী আয়ে ধাক্কা লেগেছে। সামনের দিনগুলোতে যা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন  দেশী বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা।

সংকট মোকাবিলায় আসছে বাজেটে প্রবাসী-কল্যাণে বরাদ্দ বাড়াতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন অভিবাসন খাতের গবেষকরা। প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠকরা বলছেন, সরকারকে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে যোগ্য প্রতিনিধি নিয়োগ, গবেষণা জোরদারসহ বিশেষ পরিকল্পনাও হাতে নিতে হবে ।

এক কোটি বাংলাদেশি শ্রমিক দেড় শতাধিক দেশের শ্রমবাজারে প্রায় নিরলশ ভাবে কাজ করছেন। যাদের অবদান জিডিপিতে ১২ শতাংশ। এই অবদান মজবুত করেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে। করোনা মহামারীতেও প্রবাসী শ্রমিকের অবদানে রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৩৪ বিলিয়ন ডলার ।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রকোপে বিপর্যস্ত প্রবাসী শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেই সিংহভাগ প্রবাসী কাজ করে, যেখানে জ্বালানি তেলের দাম কমা, পর্যটনসহ অর্থনীতির প্রায় সব খাতেই পড়েছে করোনার থাবা। অন্যান্য দেশেও লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিনের কর্মবিরতি চলছে।

করোনা পরিস্তিতে এরই মধ্যে কাজ হারিয়ে এক লাখের বেশি শ্রমিক দেশে ফিরেছে বলেও জানিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সেইসাথে ছুটিতে আসা কয়েক লাখ শ্রমিক ফিরতে পারেননি কাজে। সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকটি উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে করোনার প্রভাবে বেকার হয়েছেন ১৪ লাখ প্রবাসী শ্রমিক। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা আছে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঘোষণা হতে যাওয়া বাজেটে প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন সংগঠক এম এস সেকিল চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমাদের মিশনগুলোতে সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা বাড়াতে হবে। প্রবাসীদের নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা দেশে হয়নি। এটার খুব দরকার রয়েছে।

সরকার গতবছর প্রথমবারের মত প্রবাসীদের রেমিটেন্সে নগদ ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে । বরাদ্দ রাখা হয় ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা। যা বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন গবেষক তাসনিম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী এ বছর আমাদের রেমিটেন্স কমে যাবে প্রায় ২২ শতাংশ। এটা মাথায় রেখেই এবারের বাজেট দিতে হবে। প্রবাসীদের উৎসাহ দিতে কমপক্ষে ৪ শতাংশ প্রণোদনা দেবার দাবি জানাচ্ছি।

চলতি অর্থবছর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রনালয় ২১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স প্রত্যাশা করেছিলো, এখন পর্যন্ত ১১ মাসে এসেছে, ১৬৩৫ কোটি ডলার।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

%d bloggers like this: