চলছে ৭৭তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব। করোনা মহামারির এই সময় এটিই হচ্ছে বড় পরিসরের কোনো চলচ্চিত্র আয়োজন। অন্যদিকে আজ ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসব।
২ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এই উৎসব এ বছর নজর কেড়েছে বিশ্ববাসীর। করোনাকালের নতুন স্বাভাবিক অবস্থা মেনে নিয়ে কেমন করে সাজানো হলো বিশ্বমানের একটি উৎসব, এ নিয়ে অনেকের মনে ছিল কৌতূহল।
যেহেতু ইতালি ভ্রমণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারীদের ওপর এখনো বিধিনিষেধ আছে, তাই ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব এবার ছিল প্রায় তারকাশূন্য। উৎসবে অংশ নিয়েছেন ব্রিটিশ অভিনেত্রী টিলডা সুইনটন। তিনি গ্রহণ করেছেন এবারের উৎসবের আজীবন সম্মাননা ‘গোল্ডেন লায়ন’। তবে মঞ্চের আলো তাঁর দিকে পড়ার আগপর্যন্ত এই অভিনেত্রী নতুন স্বাভাবিকের নিয়ম মেনে নিজের চেহারা মাস্কেই ঢেকে রেখেছিলেন। শুধু টিলডা নন, উৎসবে অংশ নেওয়া প্রত্যেকেই এ বছর মেকআপ বা গয়না পরার কথা ভুলে গেলেও ভোলেননি মাস্ক নিতে। কারণ, উৎসবে অংশ নেওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত ছিল এটি।

উৎসবস্থলের জায়গায় জায়গায় ছিল স্যানিটাইজার বুথ। আয়োজকেরা সর্বক্ষণ তটস্থ ছিলেন অংশগ্রহণকারীদের গায়ের তাপমাত্রা মেপে দেখার কাজে। নির্দিষ্ট পরিচিতি নম্বর স্ক্যান করে উৎসবে আগতদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছে কর্তৃপক্ষ। কারও মাস্ক নাকের নিচে নেমে গেলেই ছুটে এসেছেন সেচ্ছাসেবকেরা।

তবে এত সব নিয়মকানুনের ভিড়েও সিনেমার জৌলুশ কমেনি। সিনেমাহলে মাস্ক পরে বসে সবাই উপভোগ করেছেন চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। প্রায় ৩–৪ মাস পর বড় পর্দায় ছবি দেখে চোখ ভিজে গেছে অনেকের। ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে দানিয়েলা লুকেত্তির লাচি, পেদ্রো আলমোদোভার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দ্য হিউম্যান ভয়েস, ক্লোয়ে ঝাউয়ের নোম্যাডল্যান্ড এবং রেজিনা কিংয়ের ওয়ান নাইট ইন মিয়ামিসহ আরও অনেক ছবি।
২০তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, কানাডা
অন আর অফলাইনের উৎসব
ভেনিস উৎসবের গায়ে গা লাগিয়ে শুরু হচ্ছে কানাডার টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। টরন্টো উৎসবেরও প্রাণ এবার মাস্ক ও স্যানিটাইজার। সামাজিক দূরত্বের রীতি মেনে এখানেও চলবে সিনেমার প্রদর্শনী। বরং অন্য সময়ের চেয়ে এ বছর করোনাকাল বাড়িয়ে দিয়েছে প্রদর্শনীর সংখ্যা, বেড়েছে প্রদর্শনীস্থলের সংখ্যাও।

উৎসবের প্রদর্শনী হবে অনলাইন ও অফলাইনে (অর্থাৎ শারীরিক প্রদর্শনী)। অফলাইন প্রদর্শনীর মধ্যেও আছে নানা ধরন। খোলা আকাশের নিচে হবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, হবে ড্রাইভ–ইন প্রদর্শনী, পাশাপাশি গতানুগতিক থিয়েটার প্রদর্শনীও থাকবে। তবে প্রতিটিতেই আসনসংখ্যা থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক, যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়। আর ভার্চ্যুয়াল প্রদর্শনীটি সীমাবদ্ধ থাকবে শুধু কানাডায় বসবাসরতদের জন্য। উৎসব উদ্বোধন হবে স্পাইক লির ধারণ করা ডেভিড বায়ার্নের ব্রডওয়ে কনসার্ট ‘আমেরিকান ইউটোপিয়া’ দিয়ে। এতে আরও প্রদর্শিত হবে মিরা নায়ারের আ সুইটেবল বয়, ক্লোয়ে ঝাউয়ের নোম্যাডল্যান্ড এবং রেজিনা কিংয়ের ওয়ান নাইট ইন মিয়ামি।
যেহেতু এই উৎসবেও অংশ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তারকারা কানাডায় যেতে পারবেন না, তাই টরন্টো উৎসবেও তারার জৌলুশ থাকবে কম। তবে ‘অনলাইন’ তারকারা ঠিকই উৎসবের অংশ হবেন। ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এই উৎসব নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করবেন। এ ছাড়া বিশেষ ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন হলিউড অভিনেতা অ্যান্থনি হপকিন্স, অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট, হ্যালি বেরি, নির্মাতা মিরা নায়ারসহ আরও অনেকে। এটি কানাডার স্থানীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত হবে। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শকের জন্য এটি স্ট্রিম করবে ভ্যারাইটি ম্যাগাজিন।
