চাঁদপুর শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের পাশে রূপসা বাজারের পশ্চিম দক্ষিণ কোনে নজর দিলেই চোখে পড়বে জমিদার প্রাসাদ। পাশেই কারুকার্জ খচিত একটি মসজিদ।
মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি কবরস্থান। এর প্রতিটি ফলকে লেখা রয়েছে চিরনিদ্রায় শায়িত ব্যক্তিদের সুকর্মের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। পথ ধরে সামনে এগুলেই চোখে পড়বে ঘাঁট বাঁধানো দীঘি।
তবে আগের সে দীঘি এখন আর নেই। সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে জমিদার বাড়ির পুরো পরিবেশ।
বাড়িটির সামনে তাকালে নজরে পড়বে জমিদারবাড়ির ঐতিহ্য সেই কাছারি ঘর। প্রায় দু’শতাব্দির আগের কথা। আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে রূপসার জমিদারদের গোড়াপত্তন।
গ্রামের নাম রূপসা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও সুদীর্ঘ ঐতিহ্যই এর রূপের অহংকার। প্রায় দু’শতাব্দী আগের কথা। যখন এ অঞ্চলের বেশীরভাগ জনপদগুলোতে উন্নত সভ্যতার আলোর ছোয়া পায়নি। চাদের নামে নাম চাদপুর জেলার সুপ্রাচীন জনপদ ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা গ্রাম তখনও স্নিগ্ধতায় সমৃদ্ধ ছিলো। সমৃদ্ধশালী এ গ্রামটির গৌরবময় ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে ঐ গ্রামেরই ঐতিহ্যবাহী জমিদার পরিবারের ইতিহাস।
উনিশ শতকের প্রথমভাগে মোহাম্মদ গাজী এ জমিদার পরিবারের পত্তন করেন। প্রকৃত অর্থে মোহাম্মদ গাজীর সুযোগ্য পুত্র আহমেদ গাজী চৌধুরীর সময়কালেই এ জমিদার পরিবারের বিস্ত্ততি ঘটে। সাধারণভাবে জমিদার বলতেই সাধারণ মানুষের মনে যে নেতিবাচক প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠে আহমেদ গাজী সে ধরনের জমিদার ছিলেন না। প্রজা হিতৈসী এ জমিদার তার কাজের মাধ্যমে নিজেকে একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। দয়া ও দানশীলতাই ছিলো তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি অনেক জমি ওয়াকফ করে যান্।
এখানে লাউতলীর দিঘি’র ওয়াকফ উল্লেখযোগ্য। শিক্ষানুরাগী এ জমিদার অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এর মধ্যে রূপসা আহম্মদিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং রূপসা আহম্মদিয়া মাদ্রাসা উল্লেখযোগ্য। তিনি ছিলেন খুবই ধর্মানুরাগী। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারকল্পে তিনি অকৃপণভাবে অনুদান প্রদান করতেন। রূপসার সুপ্রাচীন জামে মসজিদ তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়া আরো অনেকগুলো মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।
কিভাবে যাওয়া যায়:
ফরিদ্গঞ্জ থেকে ৫ কিমি দূরে সড়ক পথে রূপসা গ্রাম