ভারতের আসাম ও প্রতিবেশী নেপালে ভয়াবহ বন্যায় মারা গেছেন কমপক্ষে ২০০ মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বন্ধ করার উদ্যোগও মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। ভারি বর্ষণের কারণে আসামে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভেঙে পানি প্লাবিত করেছে কমপক্ষে ২০০০ গ্রাম। এসব গ্রাম বন্যার পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে ভূমিধস। এতে গত দুই সপ্তাহে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কমপক্ষে ২৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। এ রাজ্যে বন্যায় মারা গেছেন ৮৫ জন।
রাজ্যের পানিসম্পদ মন্ত্রী কেশব মাহাতো বলেছেন, বেশির ভাগ নদনদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতি এখনও সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছে। ওদিকে, বন্যায় নেপালে মারা গেছেন কমপক্ষে ১১০ জন। এখনও সেখানে নিখোঁজ রয়েছেন ৫০ জন। ১০ লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাষ দেয়া হয়েছে। আসামে সরকারি কর্মকর্তারা দ্রুতগতিতে লাখ লাখ অধিবাসীকে উদ্ধার অভিযানের ফলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে গাদাগাদি করে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছেন ৫০ হাজার মানুষ। ব্যাপকহারে উদ্ধার এবং জরুরি ত্রাণ তৎপরতার কারণে এসব আশ্রয় শিবিরে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তারা। আসামের বন্যা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বাহিনীর সদস্য সঙ্ঘমিত্র সান্ন্যাল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান পানির কারণে লোকজনকে যখন সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে তখন সেখানে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা খুবই কঠিন। তবু আমরা লোকজনকে এক টুকরো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে অন্তত তাদের মুখ ও নাক ঢেকে রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
আসামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। প্রতিদিন সেখানে এক হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সব মিলে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ২৫ হাজার। গত সপ্তাহে পুরো ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। পুরো বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রান্তের দিক দিয়ে ভারত তৃতীয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, কাজীরাঙ্গা জাতীয় পার্কে ৯টি গন্ডার সহ কয়েক শত পশু ডুবে গেছে। কাজীরাঙ্গা জাতীয় পার্ক ও টাইগার রিজার্ভ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪০৭ বর্গমাইলের এই পার্কের শতকরা ৮৫ ভাগ পানির নিচে।